
তামিম ইকবাল
বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা দরকার?—এই প্রশ্নের জবাবে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত ফ্যাসিলিটিজ (সুযোগ–সুবিধা) নেই।’
প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ ভিডিও সাক্ষাৎকারে তামিম আড্ডার ছলে নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের বাস্তব চিত্র নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
ফ্যাসিলিটিজের ঘাটতি নিয়ে তামিমের ব্যাখ্যা
তামিমের মতে, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সঠিক অনুশীলনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত:
-
আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ নেই:
‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের জন্য যেমন ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমাদের তার আশপাশেও কিছু নেই। পৃথিবীর তৃতীয়–চতুর্থ ধনী বোর্ড হয়েও আমাদের ফ্যাসিলিটিজ খুবই সীমিত।’ -
ক্যারিয়ার উন্নতির বাধা:
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, মুশফিকুর রহিমের উন্নতি কঠোর পরিশ্রমের ফল। যদি সেরা সুযোগ থাকত, আরও অনেক খেলোয়াড় মাঝারি মান থেকে উন্নতি করে বিশ্বমানের হতে পারতেন। -
জাতীয় দলে এসে শেখার প্রবণতা:
তামিম আক্ষেপ করে বলেন, অনূর্ধ্ব–১৫, অনূর্ধ্ব–১৭ বা অনূর্ধ্ব–১৯ পর্যায়ে শেখার কথা যেসব বিষয়, সেগুলো খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে এসে শিখছে।
সমাধানের পথে তামিমের পরিকল্পনা
তামিম স্বপ্ন দেখছেন ক্রিকেট বোর্ডে যোগ দিয়ে বাস্তব পরিবর্তন আনার। বিসিবি নির্বাচনে পরিচালক হিসেবে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন:
-
এক্সিলেন্স সেন্টার:
‘আমি যদি বোর্ডে আসি, প্রথম লক্ষ্য হবে এক্সিলেন্স সেন্টার তৈরি করা। কোথায় জমি, কীভাবে হবে—সব বিশদ পরিকল্পনা আমার কাছে আছে।’ -
স্কুল ক্রিকেট:
তামিমের মতে, বাংলাদেশের সবচেয়ে কার্যকর মডেল হতে পারে স্কুল ক্রিকেট। আগে নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট জনপ্রিয় ছিল, এখন সেটি হারিয়ে গেছে। এটি পুনরুজ্জীবিত করা জরুরি। -
একাডেমি ও কোচ উন্নয়ন:
প্রতিটি এলাকায় মাঠ ও একাডেমির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘সব একাডেমি থেকে কয়েক শ কোচ তৈরি হচ্ছে। তাঁদের জন্য প্রতিবছর সেমিনার করলে তারা বিশ্ব ক্রিকেটের নতুন টেকনিক জানতে পারবেন।’ -
অসচ্ছল পরিবারের প্রতিভা:
তামিম মনে করেন, অধিকাংশ ক্রিকেটার গরিব পরিবার থেকে উঠে আসে। সঠিক কোচিং আর ফ্যাসিলিটিজ দিলে এই প্রতিভারা আরও ভালোভাবে বিকশিত হতে পারবে।
তামিমের লক্ষ্য
‘আমার স্বপ্ন অনেক বড় নয়,’ বলেন তামিম, ‘কেবল দুই–তিনটি জায়গায় কাজ করতে চাই। এক্সিলেন্স সেন্টার গড়ে তুলতে পারলে শুধু ক্রিকেট নয়, অন্য খেলাও উপকৃত হবে।’