
ওষুধ আবিষ্কারে এআই: বিজ্ঞানীদের সহায়ক, বিকল্প নয়
ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। জিন, প্রোটিন ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিপুল ডেটা বিশ্লেষণ করে এআই দ্রুত নতুন সম্ভাব্য অণু শনাক্ত করতে সক্ষম হচ্ছে। এমনকি ‘ডি নোভো ড্রাগ ডিজাইন’ প্রযুক্তির মাধ্যমে শূন্য থেকে নতুন অণু তৈরির কাজও করছে এআই, যা খরচ ও সময় উভয়ই কমাচ্ছে। ইয়ন
গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এআই-ভিত্তিক ওষুধ আবিষ্কারের বাজারের আকার ছিল প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩০ সালের মধ্যে এই বাজার দাঁড়াতে পারে ২০.৩ বিলিয়ন ডলারে, যা প্রতিবছর প্রায় ৩০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক (ফেজ-১) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এআই-ডিজাইন করা ওষুধ প্রার্থীদের সফলতার হার দাঁড়িয়েছে ৮০–৯০ শতাংশে, যা প্রচলিত হারের তুলনায় অনেক বেশি। এরই মধ্যে এমআইটি গবেষকরা এআই-এর মাধ্যমে একটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন, যা এমআরএসএসহ একাধিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া, সম্প্রতি ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ইলাই লিলি এবং এআই কোম্পানি সুপারলুমিনালের মধ্যে স্থূলতা চিকিৎসায় ওষুধ উন্নয়নের জন্য ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছে।
তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এআই যত দ্রুত ও কার্যকরই হোক না কেন, এটি কখনোই মানুষের বিকল্প নয়। রোগবিজ্ঞানের জটিলতা বোঝা, নতুন গবেষণার প্রশ্ন তৈরি করা, পরীক্ষার দিকনির্দেশনা দেওয়া এবং নৈতিকতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মানুষের সৃজনশীলতা অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এআই ব্যবহারে ব্যক্তিগত ডেটার গোপনীয়তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে এবং বিরল রোগ সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যার আশঙ্কাও থেকে যায়।
সুতরাং, ওষুধ আবিষ্কারে এআই এক শক্তিশালী সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখবে ঠিকই, তবে বিজ্ঞানীদের তদারকি ও সৃজনশীলতার বিকল্প হয়ে উঠবে না।