
কাতার
কাতারের রাজধানী দোহায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতাদের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে আরব ও ইসলামি দেশগুলো। গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত জরুরি সম্মেলনে এ হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ ও ‘অবৈধ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। তবে সম্মেলনে কোনো তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়নি।
জিসিসির যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি
সম্মেলনে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) ছয় সদস্য দেশ—বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত—একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এতে বলা হয়েছে, জিসিসির কোনো এক সদস্য দেশের ওপর হামলাকে সব সদস্য দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ মুহাম্মদ আল-আনসারি জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়াতে উপসাগরীয় অঞ্চলে ইতিমধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই দোহায় জোটের সমন্বিত সামরিক কমান্ড বৈঠক করবে।
কাতারের আমিরের বক্তব্য
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি উদ্বোধনী বক্তৃতায় হামলাকে “নির্লজ্জ ও রক্তপিপাসু” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,
“আমার দেশের রাজধানীতে হামাস নেতাদের পরিবার ও আলোচক দলের বাসস্থানকে নিশানা করে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে। এটি প্রমাণ করে, ইসরায়েলের শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো ইচ্ছা নেই; বরং যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আরব অঞ্চলকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছেন, যা তিনি “বিপজ্জনক বিভ্রম” হিসেবে আখ্যা দেন।
আরব–ইসলামি সংহতি
আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানায় এবং কাতারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়। কাতারের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার প্রশংসা করে বলা হয়, দেশটি মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
-
জিসিসির মহাসচিব জাসেম মোহামেদ আলবুদাইউয়ি যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
-
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েল কাতারের ওপর আর হামলা চালাবে না।
-
রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আন্দ্রিয়া দেসি মনে করেন, দোহা সম্মেলন আরব ও ইসলামি দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের সূচনা করেছে।
প্রেক্ষাপট
গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৮০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস নেতাদের ওপর দোহায় হামলা চালানো হয় যখন তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন।