
ভারত
উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থায় ভয়াবহ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ভারতের বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট (বিসিসিআই)–কে নোটিশ পাঠিয়েছে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। কলা কেনা থেকে শুরু করে প্রতিযোগিতা আয়োজন পর্যন্ত নানা খাতে কোটি কোটি টাকা খরচ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
৩৫ লাখ টাকার কলা কেনা!
দেরাদূনের বাসিন্দা সঞ্জয় রাওয়াতসহ কয়েকজনের দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি মনোজ কুমার তিওয়ারির বেঞ্চে। শুনানিতে জানানো হয়, ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষের আর্থিক বিবরণীতে কলা কেনার জন্য খরচ দেখানো হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এ ঘটনায় আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিসিসিআইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
কোটি টাকার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট
অভিযোগে বলা হয়,
-
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট খাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
-
প্রতিযোগিতা আয়োজনের খাতে খরচ হয়েছে ২৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪ কোটি টাকা বেশি।
তবে এই বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও খেলোয়াড়রা কোনো সুবিধা পাননি। প্রতিশ্রুত সুবিধা দেওয়া হয়নি, বরং বাজেটের বড় অংশ কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত খাতে ব্যয় করেছেন বলে মামলাকারীদের দাবি।
ক্রিকেটারদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা
অভিযোগে আরও বলা হয়, খাবার, আবাসন এবং খেলোয়াড়দের কল্যাণে যে অর্থ বরাদ্দ ছিল, তা সঠিকভাবে ব্যবহার না করে কর্মকর্তারা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে রাজ্যের ক্রিকেটাররা উন্নয়ন ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
প্রিমিয়ার লিগ নিয়েও অনিয়ম
উত্তরাখণ্ড প্রিমিয়ার লিগ আয়োজনেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সংস্থার সাবেক সহসভাপতি সুরেন্দ্র ভান্ডারি মামলা করে জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে, অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় আনা হয়নি।
আদালতের নির্দেশ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
হাইকোর্ট মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে আগামী শুক্রবার। আদালত বিসিসিআইকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন উত্তরাখণ্ড সংস্থার আর্থিক অনিয়ম তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
ক্রিকেট মহলে এখন প্রশ্ন উঠেছে—রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কর্মকর্তারা যখন কোটি কোটি টাকার জালিয়াতি করছে, তখন বিসিসিআই এত দিন চুপ করে ছিল কেন?