
তামিম ইকবাল
জাতীয় দলে দীর্ঘদিনের পথচলার পর বিদায়, এবার ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়েও শঙ্কা—হার্ট অ্যাটাকের ঘটনার পর তামিম ইকবালের ক্রিকেট অধ্যায় কার্যত শেষের পথে। তবে তামিম থেমে নেই। নতুন জীবনের পথচলায় নিজেকে খুঁজছেন নেতৃত্ব, ক্রীড়া সংগঠন ও ক্রিকেট উন্নয়ন চিন্তায়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ (৩ মে) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তামিম ইকবাল মুখ খুললেন বিসিবি নির্বাচন ও দেশের ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে।
বোর্ড পরিচালক হিসেবে ‘যোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তামিমের
বক্তব্যের শুরুতেই সাবেক এই টাইগার ওপেনার বলেন,
“ক্রিকেট বোর্ডে কারা আমাদের পলিসি মেকার? কারা ডিসিশন নিচ্ছে? যারা বোর্ডে আছে, তাদের স্বপ্ন কী আমাদের নিয়ে? তাদের ক্রিকেটিং আন্ডারস্ট্যান্ডিং কতটুকু? এসব কিছুই নির্ধারণ করে বাংলাদেশ দল ভালো খেলবে কিনা।”
তিনি আরও বলেন, যারা বোর্ডে আছেন, তাদের অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় ক্রিকেট উন্নয়নে ব্যর্থ।
“বোর্ডে থেকে যদি কেউ নিজের জেলা বা বিভাগেই লিগ আয়োজন না করতে পারেন, তাহলে তাঁর বোর্ডে থাকার প্রশ্নই ওঠে না।”
বিসিবি নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীর আহ্বান
কয়েক মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন। সেই নির্বাচন সামনে রেখে তামিম ইকবালের বার্তা একটাই—যোগ্যদের বেছে নিতে হবে।
“আমি ছোট হয়ে আপনাদের একটা অনুরোধ করতে চাই—যারা যোগ্য, যাদের ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্ন আছে, যারা জানেন ক্রিকেট কীভাবে এগোয়, শুধু তারাই যেন বোর্ডে আসেন। জেলা বা বিভাগ থেকে যাঁরা আসেন, তাঁদের ক্রিকেটের বেসিক ধারণা থাকা আবশ্যক।”
তামিমের এই বক্তব্য দেশের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে চলা ‘অক্রিকেটিং’ নেতৃত্বের প্রতি স্পষ্ট একটি বার্তা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন ফুটবল তারকারাও
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামও। দুই ভিন্ন খেলার এই দুই কিংবদন্তি ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ চিন্তার ওপর জোর দেন।
ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বিদায়ের পর একজন চিন্তাশীল ক্রীড়া সংগঠকের রূপ ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। মাঠ ছেড়ে এসে তিনি যে শুধু অতীতের সাফল্য নিয়ে গর্ব করছেন না, বরং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দিতেও প্রস্তুত, আজকের বক্তব্য তার প্রমাণ। বিসিবি নির্বাচনের প্রাক্কালে তাঁর এই বক্তব্য দেশের ক্রীড়া অঙ্গনে যথেষ্ট আলোচনার জন্ম দেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।