ঢাকা,  রোববার
১৩ জুলাই ২০২৫

Advertisement
Advertisement

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: যুবদল দুই নেতাকে বহিষ্কার করলেও পুলিশ বলছে, ‘আসামিদের পরিচয় মেলেনি’

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ১২ জুলাই ২০২৫

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: যুবদল দুই নেতাকে বহিষ্কার করলেও পুলিশ বলছে, ‘আসামিদের পরিচয় মেলেনি’

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যুবদলের দুই নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলেও পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত জড়িতদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম বলেন, “একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। অপরাধীরা কে, কেন করেছে, সেটাই আমাদের মূল বিবেচ্য। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে পারিনি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা রাজনৈতিক কোনো পরিচয় দিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা কোনো স্পষ্ট রাজনৈতিক পরিচয় দেননি।”

এদিকে, নিহত লাল চাঁদের পরিবারের দায়ের করা মামলায় নাম থাকায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক রজ্জব আলী পিন্টু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবাহ করিম লাকিকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে যুবদল। এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

তবে পুলিশ বলছে, সংগঠন তাদের নিজস্ব সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিসি জসীম বলেন, “যুবদল তাদের নিজস্ব বিবেচনায় বহিষ্কার করেছে। পুলিশ রাজনৈতিক কোনো দৃষ্টিকোণ থেকে তদন্ত করছে না।”

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নিহত সোহাগ ও অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান মহিন, টিটুসহ অন্যান্যরা রাজধানীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তাদের দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিতে দেখা গেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

ঘটনার পেছনে কী?

ডিসি জসীম বলেন, “৯ জুলাই বিকেল ৫টা ৪০ থেকে ৬টার মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৩ নম্বর গেট ও আশপাশের এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।”

তিনি জানান, ঘটনার নেপথ্যে ভাঙারি ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। ভুক্তভোগী সোহাগ ও অভিযুক্তরা একসময় একসঙ্গে ব্যবসা করতেন। পরবর্তীতে লেনদেনসংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও দোকান দখলকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

তদন্তের অগ্রগতি

ডিসি আরও জানান, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—তাদের মধ্যে তিনজনকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ এবং দুইজনকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে।

তিনি বলেন, “এটা চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আমরা মোটিভ, পরিকল্পনা এবং পেছনের মদদদাতা—সবকিছু খতিয়ে দেখছি। যদি তদন্তে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে, অবশ্যই জানানো হবে।”

নিরাপত্তা ব্যত্যয় ছিল কি না?

ঘটনার সময় পুলিশের টহল ও উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, “ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্তদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তদন্তের অংশ হিসেবে গোটা নিরাপত্তা পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531