
ফ্রিজের ওপর
ছোট ঘরে স্থান বাঁচাতে অনেকেই ফ্রিজের ওপর জিনিস রাখেন। রুটি, কৌটা, বই, ওষুধ থেকে শুরু করে ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র পর্যন্ত—সবকিছুই যেন জায়গা করে নেয় ফ্রিজের ওপর। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস শুধু ভুল নয়, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণও।
ফ্রিজের গরম বাতাস আর আপনার ভুল সিদ্ধান্ত
খাবার ঠান্ডা করতে গিয়ে ফ্রিজ নিজেই উষ্ণ হয়ে ওঠে। এই গরম বাতাস বের হয় ফ্রিজের পেছন কিংবা ওপরের দিকে থাকা কনডেনসার দিয়ে। ফ্রিজের ওপর কিছু রাখলে বাতাস চলাচল ব্যাহত হয়, ফলে
-
ফ্রিজের ভেতরের ঠান্ডা কমে,
-
বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়,
-
আয়ু কমে,
-
সবচেয়ে বড় কথা—আগুন লাগার ঝুঁকি তৈরি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গরমের সঙ্গে অনেক জিনিসের সংস্পর্শে এলে তা সহজেই দাহ্য হয়ে উঠতে পারে।
ফ্রিজের ওপর যেসব জিনিস রাখা একেবারেই নয়:
১. রুটি ও বেকারি পণ্য:
প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা রুটি ও বেকারি পণ্য তাপ ও আর্দ্রতার কারণে দ্রুত বাসি হয়ে যায় এবং ছত্রাক পড়ে।
২. রান্নার বই ও কাগজপত্র:
এগুলো দাহ্য উপাদান। ফ্রিজের তাপে আগুন ধরার আশঙ্কা থাকে। বাতাস চলাচলের পথও আটকে যেতে পারে।
৩. ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র (টোস্টার, কফি মেকার, রাইস কুকার):
ভারি ও ঝুঁকিপূর্ণ। পড়ে গিয়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা, শরীরেও আঘাত লাগতে পারে।
৪. বিস্কুটের কৌটা বা কাচের পাত্র:
শিশুরা খাবারের লোভে ফ্রিজে উঠতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হতে পারে।
৫. ওষুধ:
উপরে রেখে ভাবছেন নিরাপদ? ভুল। তাপ ও আর্দ্রতা ওষুধের গুণ নষ্ট করে দিতে পারে।
৬. সিরিয়াল বা শুকনো খাবার:
সহজেই নিচে পড়ে যেতে পারে। খোলা থাকলে পোকামাকড়ও বাসা বাঁধে।
৭. ফল ও সবজি:
ফ্রিজের তাপে তাজা ফল ও সবজি দ্রুত পচে যায়। মাছি ও কীটপতঙ্গ আকৃষ্ট হয়।
৮. মসলাপাতি:
তাপে মসলার গুণ ও গন্ধ হারিয়ে যায়। ফ্রিজের ওপরে রাখা মানেই মসলার অপচয়।
বিকল্প কী?
-
দেয়ালে ঝুলন্ত শেলফ ব্যবহার করুন
-
রান্নাঘরের কেবিনেট বা ড্রয়ার ব্যবহার করুন
-
ওষুধ রাখুন তালাবদ্ধ ও শুকনো জায়গায়
-
শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন দাহ্য ও বিপজ্জনক উপকরণ
জায়গা বাঁচাতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন না নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা। ফ্রিজ শুধু ঠান্ডা রাখার যন্ত্র নয়, এর গরম দিকটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।