
বাংলাদেশ দল
সিলেট টেস্টে হারের তীব্র সমালোচনার পর দ্বিতীয় টেস্টেই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। মাত্র তিন দিনে জয় নিশ্চিত করে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছে টাইগাররা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ঘরের মাঠে টানা ছয় টেস্ট হারের ধারাও ভাঙলো বাংলাদেশের।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে দাপট
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অলআউট হওয়ার জবাবে ১২৯.২ ওভারে ৪৪৪ রান তোলে বাংলাদেশ। ওপেনার সাদমান ইসলাম ১২০ রান এবং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ১০৪ রান করে ইনিংসের ভিত্তি গড়েন। এছাড়া তানজিম হাসান সাকিব ৪১, মুশফিকুর রহিম ৪০ ও এনামুল হক বিজয় ৩৯ রান করে দলের সংগ্রহে বড় অবদান রাখেন।
নবম উইকেটে মিরাজ ও তানজিম সাকিবের ৯৬ রানের জুটি দলকে এনে দেয় ২১৭ রানের লিড। শেষ ব্যাটার হাসান মাহমুদ ১৬ বল খেলে শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন।
জিম্বাবুয়ের হয়ে অভিষিক্ত স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা ৫ উইকেট নেন, খরচ করেন ১১৫ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিন-ঝড়ে বিধ্বস্ত জিম্বাবুয়ে
লিডের চাপে দ্বিতীয় ইনিংসে নামা জিম্বাবুয়ে মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে যায় ৪৬.২ ওভারে। শুরুতেই উইকেট তুলে নেন তাইজুল ইসলাম। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন মাত্র ৩২ রানে।
বাকি উইকেটগুলো ভাগাভাগি করেন তাইজুল ইসলাম (৩টি) ও নাঈম হাসান (১টি)।
শুরুতে দ্রুত উইকেট হারালেও বেন কারেন কিছুটা লড়াই করেন। ১০৩ বলে ৪৬ রান করে তিনিই ছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সেরা ব্যাটার। তবে মিরাজের ঘূর্ণিতে তার ইনিংসও থেমে যায়।
শেষ ব্যাটার ভিনসেন্ট মাসেকেসাকে রানআউট করে জয় নিশ্চিত করেন মুমিনুল হক।
ম্যাচের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলো:
-
মিরাজের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি, দুটিই চট্টগ্রাম ভেন্যুতে।
-
তাইজুল ইসলাম প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট।
-
জিম্বাবুয়ে ২২৭ ও ১১১ রানেই অলআউট, দুটি ইনিংসেই স্পিনারদের শিকার।
-
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৫ ব্যাটার ৩০+ রান করেন, যা ইনিংসের ভারসাম্য নিশ্চিত করে।
-
ম্যাচ সেরা পারফরমার: মেহেদী হাসান মিরাজ (১০৪ রান ও ৫ উইকেট)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২২৭/১০ (শন উইলিয়ামস ৬৭; তাইজুল ৬/৬০)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৪৪/১০ (সাদমান ১২০, মিরাজ ১০৪; মাসেকাসা ৫/১১৫)
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ১১১/১০ (কারেন ৪৬; মিরাজ ৫/৩২)
বাংলাদেশের এই জয় টেস্ট দলে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনলো, আর দর্শকদেরও দিলো স্বস্তি। সিরিজ সমতায় শেষ করলেও পারফরম্যান্স ও মনোভাবে দারুণ বার্তা দিল টাইগাররা।