ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫

Advertisement
Advertisement

বয়স পঞ্চাশের পর বিচ্ছেদ বাড়ছে কেন? গ্রে ডিভোর্সের কারণ, প্রভাব ও করণীয়

প্রকাশিত: ১৫:০৬, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৫:০৯, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

বয়স পঞ্চাশের পর বিচ্ছেদ বাড়ছে কেন? গ্রে ডিভোর্সের কারণ, প্রভাব ও করণীয়

গ্রে ডিভোর্সের কারণ

গ্রে ডিভোর্স: বয়স পেরোনো ভালোবাসার ভাঙন

পঞ্চাশ বছর বা তার বেশি বয়সী দম্পতিরা বহু বছর একসঙ্গে থাকার পর হঠাৎ আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘটনা দিনকে দিন বাড়ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা একে বলেন “গ্রে ডিভোর্স”। বিল গেটস, এ আর রাহমান কিংবা আমির খানের মতো পরিচিত ব্যক্তিত্বদের জীবনেও দেখা গেছে এ প্রবণতা। কিন্তু কেন এই বয়সে এসে সম্পর্ক ভেঙে যায়? আর এর প্রভাবই বা কী হয় বিচ্ছেদ হওয়া মানুষদের জীবনে?


গ্রে ডিভোর্স কেন বাড়ছে?

? আবেগের ঘাটতি

আগে সম্পর্ক গড়ে উঠত সামাজিক দায়িত্ব বা বাধ্যবাধকতার কারণে। এখন মানুষ চায় এমন একজন সঙ্গী, যিনি মানসিকভাবে তাঁকে বুঝবেন। আবেগগত সংযোগ না থাকলে, বছর পেরোলেও সেই সম্পর্কে পরিপূর্ণতা আসে না।

? এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম

সন্তানরা বাড়ি ছেড়ে গেলে অনেক দম্পতির সম্পর্কের মূল কেন্দ্রটাই হারিয়ে যায়। তখন শূন্যতা, একাকিত্ব আর দূরত্ব বাড়তে থাকে, যা ডিভোর্সের দিকে ঠেলে দেয়।

? অবিশ্বাসের ঘেরাটোপ

দীর্ঘ সম্পর্কে সন্দেহ, যোগাযোগহীনতা, আবেগ বা শারীরিক দূরত্ব থেকে অনেক সময় এক বা উভয় পক্ষ অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এতে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

? আর্থিক দ্বন্দ্ব ও স্বাবলম্বিতা

নারীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আর্থিকভাবে স্বাধীন। এতে অনেক সময় অবসর-পরবর্তী জীবন, সঞ্চয়, খরচসহ নানা বিষয়ে মতের অমিল তৈরি হয়, যা বড় দ্বন্দ্বের রূপ নেয়।


বিচ্ছেদের পর মানসিক চ্যালেঞ্জগুলো কী?

? পরিচয় সংকট ও একাকিত্ব

অনেকেই মনে করেন, “সঙ্গী না থাকলে আমি কে?” দীর্ঘ সময় একসঙ্গে থাকার পর বিচ্ছেদে সেই পরিচয়ের ভার ভেঙে পড়ে। তৈরি হয় একাকিত্ব ও হতাশা।

? সমাজের কটুকথা

“এই বয়সে ডিভোর্স?”, “এখন তো জীবন শেষের দিকে!”—এমন মন্তব্য ডিভোর্সি মানুষকে আরও একা করে তোলে। অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

? ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয়

“আমি একা থাকব না তো?”, “আর কাউকে কি পাব?”, “কাকে নিয়ে বাকি জীবন কাটাব?”—এইসব প্রশ্ন দুশ্চিন্তা আর মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়।


মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব

বিচ্ছেদের পর কার কী অবস্থা হবে, তা নির্ভর করে ব্যক্তির জীবনধারা ও মানসিক শক্তির ওপর। স্বাধীনচেতা ও সামাজিকভাবে যুক্ত কেউ নতুন জীবন শুরু করতে পারেন সহজে। তবে যাঁদের পাশে কেউ নেই, তাঁদের মধ্যে হতাশা, উদ্বেগ, বিষণ্নতা এমনকি শারীরিক অসুস্থতাও দেখা দিতে পারে।


কীভাবে মানিয়ে নেওয়া যায়?

✅ প্রতিদিন একটি রুটিন মেনে চলুন
✅ পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন
✅ নতুন শখ বা কাজ খুঁজে বের করুন
✅ টাকা বুঝে খরচ করুন, ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করুন
✅ কাউন্সেলরের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না


নতুন জীবন শুরু করবেন কীভাবে?

  1. নিজের যত্ন নিন: মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দিন

  2. নিজেকে চিনুন: আপনি কে ছিলেন, আর এখন কে হতে চান তা ভেবে দেখুন

  3. নতুন কিছু শিখুন: পেশাগত দক্ষতা বা নতুন শখ অর্জনে মন দিন

  4. সমাজসেবায় যুক্ত হোন: এতে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় এবং মানসিক প্রশান্তিও বাড়ে


ডিভোর্স কোনো ব্যর্থতা নয়, বরং এটি হতে পারে নতুন জীবনের শুরু। বয়স যতই হোক, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। নিজেকে ভালোবাসুন, নিজেকে সময় দিন—কারণ শান্তি ও সুখ পাওয়ার অধিকার সবারই আছে।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531