
হাঁটা
হাঁটা—শরীরচর্চার সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ এবং কার্যকর একটি উপায়। ওজন কমানো, হৃদ্রোগ প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রক্তের চর্বি কমানো বা মানসিক প্রশান্তি—সবক্ষেত্রেই নিয়মিত হাঁটার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, সকালে হাঁটা ভালো, নাকি বিকেলে হাঁটলে বেশি উপকার পাওয়া যায়? চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন সময় হাঁটার কী কী উপকারিতা রয়েছে এবং কোনটি আপনার জন্য বেশি উপযোগী হতে পারে।
? সকালের হাঁটা: দিন শুরুর সেরা সঙ্গী
সকালে হাঁটা শুধু শরীর নয়, মনকেও চাঙা করে তোলে। অনেকের মতে, এটি যেন শরীর ও মনে একটি ‘রিসেট’ বোতাম টেপার মতো কাজ করে।
সকালে হাঁটার উপকারিতা:
-
বাতাস বিশুদ্ধ: ফুসফুসে ভরে যায় নির্মল তাজা বাতাসে, যা শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য দারুণ উপকারী।
-
শরীর ও মন সতেজ: পাখির ডাক, শান্ত পরিবেশ মনকে দেয় প্রশান্তি, কাজের উদ্যম বাড়ায়।
-
ওজন কমাতে সহায়ক: খালি পেটে হাঁটার ফলে ফ্যাট বার্ন হয় বেশি। বিশেষ করে পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
-
ভিটামিন ডি লাভ: সকালের রোদ শরীরে ভিটামিন ডি তৈরিতে সাহায্য করে, যা হাড় ও ত্বকের জন্য দরকারি।
-
ঘুম ও সারকাডিয়ান রিদম: যারা সকালে হাঁটেন, তাঁরা রাতে ভালো ঘুমান ও ভোরে উঠতে অভ্যস্ত হন।
-
রুটিনে আনায় সহজতা: দিনের ব্যস্ততা শুরু হওয়ার আগে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুললে তা সহজেই রুটিনে পরিণত হয়।
? বিকেলের হাঁটা: দিনের চাপ কমায়, সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য
যাদের সকালে সময় মেলে না, অথবা রাত জাগার অভ্যাস আছে, তাঁদের জন্য বিকেল হতে পারে হাঁটার উপযুক্ত সময়।
বিকেলে হাঁটার উপকারিতা:
-
রাতের ঘুম ভালো হয়: দিনের শেষে হাঁটলে মানসিক প্রশান্তি মেলে, ঘুম গভীর হয়।
-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: খাবারের পর হাঁটার ফলে রক্তের গ্লুকোজ লেভেল কমে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
-
হজমে সাহায্য: বিকেলে হাঁটলে গ্যাস্ট্রিক, বদহজম বা পেট ফোলাভাবের সমস্যা কমে।
-
ওজন কমে: দিনের মধ্যেকার খাওয়াদাওয়া ও ক্যালোরি বার্ন করতে সহায়ক।
-
সামাজিক সময়: বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাঁটলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
✅ তাহলে কখন হাঁটবেন?
সকাল ও বিকেল—উভয় সময়েই হাঁটার আলাদা উপকারিতা রয়েছে। তাই আপনি কখন হাঁটবেন, তা নির্ভর করে আপনার দৈনন্দিন রুটিন, জীবনধারা এবং শারীরিক চাহিদার ওপর।
তবে যে সময়ই হাঁটুন না কেন, অন্তত ৩০ মিনিট করে দ্রুত গতিতে হাঁটা উচিত, নিয়মিত। হাঁটুন প্রতিদিন—শুধু শরীর নয়, মনও থাকবে ফুরফুরে।