
মাসল ক্র্যাম্প
ঘুমের সময় কিংবা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের পর অনেকেই হঠাৎ করে পায়ের পেশিতে টান বা মাসল ক্র্যাম্পের শিকার হন। এ সমস্যার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা, পানিশূন্যতা, স্নায়বিক সমস্যা, দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে থাকা কিংবা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই এর অন্যতম কারণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক ইতিহাস ও মূল্যায়নের মাধ্যমে এর উৎস খুঁজে বের করাই চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি।
? চিকিৎসকের জন্য যেসব প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি:
-
কখন টান লাগে—দিনে, নাকি রাতে?
-
কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
-
কোন পেশিতে হয়?
-
কোনো ওষুধ নিচ্ছেন কি না (যেমন: ডাইউরেটিক্স, স্ট্যাটিন)?
-
পানি ও লবণের ভারসাম্য ঠিক আছে কি না?
-
ডায়াবেটিস, নিউরোপ্যাথি বা অন্যান্য রোগ আছে কি না?
✅ প্রতিরোধে করণীয়:
১. জীবনযাপন ও ঘুমের ভঙ্গি ঠিক রাখা:
-
ঘুমানোর সময় পায়ের পাতা যেন ডরসিফ্লেক্সড থাকে (আঙুল ওপরের দিকে)।
-
বালিশ দিয়ে পা সামান্য উঁচু করে রাখা যেতে পারে।
-
দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে না থাকা, হাঁটাচলা করা।
-
হাই হিল ও টাইট জুতা পরা এড়ানো।
২. নিয়মিত স্ট্রেচিং ও ব্যায়াম:
-
কাফ স্ট্রেচ, হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ, প্ল্যান্টার ফ্যাশা স্ট্রেচ নিয়মিত করুন ঘুমানোর আগে।
৩. হঠাৎ টান লাগলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা:
-
আক্রান্ত পেশিকে ধীরে ধীরে স্ট্রেচ করুন।
-
পায়ের আঙুল টেনে ধরুন, গোড়ালি মাটিতে রেখে পায়ের তালু ওপরে তুলুন।
৪. পানিশূন্যতা ও লবণ ঘাটতি প্রতিরোধ:
-
পর্যাপ্ত পানি পান করুন, বিশেষত গরমের দিনে।
-
পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান (যেমন কলা, দুধ, ডাবের পানি)।
৫. প্রয়োজনে ওষুধ ও চিকিৎসা:
-
উপসর্গ অব্যাহত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে কুইনাইন, ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট বা নিউরোপ্যাথিক ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।
-
ডায়াবেটিস ও থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
৬. ফিজিওথেরাপি ও থেরাপিউটিক পরামর্শ:
-
প্রয়োজনে টেনস থেরাপি, ট্রিগার পয়েন্ট রিলিজ বা ফাংশনাল ব্রেইস ব্যবহার করুন।
-
স্ট্রেনদেনিং ব্যায়াম ও পজিশন পরিবর্তনের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
মাসল ক্র্যাম্পকে হালকা সমস্যা মনে করে অবহেলা না করে, এর পেছনের কারণ খুঁজে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। নিয়মিত স্ট্রেচিং, সঠিক জীবনধারা ও পরিমিত পানি গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।