ঈদুল আজহায় কুরবানির গোশত এখন সবার ঘরে ঘরে। আর এ গোশত দিয়ে হরেক রকম খাবার তৈরি হচ্ছে। তবে সেই গোশতের কোন অংশের কী নাম আর কতভাবেই সেগুলো কাটা যায় বা রাঁধা যায়, তা অনেকের কাছেই অজানা।
গরুর একেক অংশ একেক পদের জন্য ভালো। নেহারির জন্য এক অংশ, স্টেক বানাতে আরেক অংশ। জিব থেকে শুরু করে পেছনের লেজ-গরুর প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই বানানো যায় কোনো না কোনো পদ। গরুর সামনের অংশ থেকে জিব, গলা, শিনা, গর্দান, সামনের রান, কুড়ুলির (শ্যাঙ্ক) গোশত পাওয়া যায়।
সামনের পায়ের অংশ দিয়ে যেকোনো ধরনের ঝোল তরকারি মজাদার হয়। রান্না করতে পারবেন রেজালার পাশাপাশি মেজবানি, ভুনা, কষা গোশতও। গলার গোশতে যেহেতু চর্বি থাকে স্তরে স্তরে, তাই এটা দিয়েও এ-জাতীয় গোশত রান্না করা যায়। শিনার গোশতে চর্বির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ওভেনে রোস্ট করা, অল্প আঁচে ৭-৮ ঘণ্টা ধরে রান্না করা, স্যান্ডউইচ, র্যাপ, ট্যাকোস বানানোর সময় যে গোশতের প্রয়োজন হয়, সেটা শিনার গোশত থেকে নেয়া ভালো। কুড়ুলির গোশত দিয়ে করা যায় নানা পদ, যেটা খুব ধীরে ধীরে রান্না করা যায়। গরুর কুঁজে কোনো হাড় থাকে না, মারবেলিং ফ্যাট থাকে। এটা দিয়ে ভুনা গোশতের পদ বানাতে পারেন।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে গোশত শুকিয়ে রাখার সংস্কৃতি
সামনের শ্যাঙ্ক বা কুড়ুলির গোশত দিয়ে ইতালিয়ান পদ ওসোবোকো রান্না করা হয়। নডুলস বা রিসোটোর সঙ্গে পরিবেশন করা হয় এ ধরনের পদ। মারবেলিং ফ্যাট থাকার কারণে প্রাইম রিব বা রিব আইয়ের অংশ দিয়ে ভালো হয় স্টেক। ওভেনে রোস্ট করেও খেতে পারেন। এ ছাড়া দেশীয় পদ্ধতিতে গেলে তাওয়ার ওপর ভেজে চাপও তৈরি করা যায়।
রিব সেট বা পাঁজরের গোশত থেকে ঝোলজাতীয় পদ বানাতে পারবেন। এ জায়গায় গোশত এবং হাড় দুটিই থাকে। এ ছাড়া ওভেনে ধীরে রান্নার জন্য বা স্মোকি বারবিকিউ রোস্ট তৈরির কাজেও ব্যবহার করতে পারেন।
বাইরের দেশে প্লেটের অংশ থেকে বিফ বেকন তৈরি করা হয়। কিন্তু আমাদের মূলত কিমার গোশত তৈরির কাজে লাগে। ফ্লাঙ্কের অংশ দিয়ে স্টেক বানানো হয়।
আরও পড়ুন: সহজে ও কম সময়ে রান্নার জন্য মাংসের কয়েকটি স্পেশাল রেসিপি
মেরুদণ্ডের নিচের অংশ থাকে শর্ট লয়েন, এখানকার গোশত দিয়ে চাপ ভালো তৈরি করা যায়। অনেক দেশে এখানকার গোশত দিয়ে টি-বোন স্টেক করা হয়ে থাকে। সিলভারসাইডের অংশ থেকে ভালো হবে কিমা বা কাবাব। স্ট্র্রিপ লয়েনের অংশটুকুতে কোনো হাড় থাকে না। শুধু গোশত। পেছনের রান থেকে বের হয় টপসাইড, মাসেলস বা সিলভারসাইড, নাকেল। এ জায়গা থেকে হাড়ছাড়া গোশত বেশি পাওয়া যায়। কাবাব বা কিমার জন্য ভালো। এ জায়গার গোশতটা একটু শক্ত হয়। কিছুটা সময় বেশি নিয়ে রান্না করতে হয় এ কারণে। কুড়ুলির পর যে অংশ থাকে, সেখান থেকে পায়া বা নিহারি ভালো হয়।