ঢাকা,  শুক্রবার
২০ জুন ২০২৫

Advertisement
Advertisement

তথ্য গোপন করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ১৮ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৯:৪৪, ১৮ জুন ২০২৫

তথ্য গোপন করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছরের কারাদণ্ড

প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়

 আইনি স্বীকৃতি পেল ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয় ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’–এর শহীদ ও আহতদের স্বীকৃতি, কল্যাণ এবং পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সরকার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) এই অধ্যাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে সরকার।


?️ মূল উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট

অধ্যাদেশের মূল লক্ষ্য:

  • শহীদ পরিবার এবং আহতদের জন্য সুনির্দিষ্ট আইনি সুরক্ষা প্রদান

  • তাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর প্রশাসনিক কাঠামো গঠন

  • মিথ্যা দাবি করে সরকারি সুবিধা নেওয়ার প্রতিরোধ

এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার জুলাই শহীদ এবং জুলাই যোদ্ধা—এই দুই শ্রেণির আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে, যা আগের কোনো আইনে ছিল না।


? অধ্যাদেশের মূল বিষয়বস্তু

১. অপরাধ ও দণ্ডের বিধান

যদি কেউ—

  • উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য দেয়

  • বিভ্রান্তিকর কাগজপত্র দাখিল করে

  • নিজেকে শহীদ পরিবার বা আহত যোদ্ধা দাবি করে সরকারি সুবিধা নেন

তাহলে তাঁর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি:

  • অনধিক ২ বছর কারাদণ্ড

  • বা ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড

  • অথবা প্রাপ্ত সুবিধার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ড

এই অপরাধকে অ-আমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

২. আইনি কাঠামো

  • ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করা হবে

  • এই অধিদপ্তর শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের তথ্য সংগ্রহ, যাচাই, কল্যাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকবে

  • অধিদপ্তরের কার্যাবলি, নিয়োগ, কর্মচারী কাঠামো ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়েছে

৩. আহতদের শ্রেণিবিন্যাস

আহতদের তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে:

  • অতি গুরুতর আহত

  • গুরুতর আহত

  • আহত (সাধারণভাবে)

এতে চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তা নির্ধারণ করা হবে শ্রেণিভেদে।

৪. বিচার প্রক্রিয়া

এই আইনের অধীনে দায়ের করা অপরাধের বিচার ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড, ১৮৯৮ অনুযায়ী পরিচালিত হবে। অর্থাৎ:

  • অভিযোগ দায়ের

  • তদন্ত

  • বিচার

  • আপিল
    সব প্রক্রিয়ায় প্রচলিত ফৌজদারি আইন কার্যকর থাকবে।


? ‘জুলাই শহীদ’ ও ‘জুলাই যোদ্ধা’: আইনি স্বীকৃতি

অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’–এ শহীদদের "জুলাই শহীদ" এবং আহতদের "জুলাই যোদ্ধা" হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে।
এ স্বীকৃতির ভিত্তিতে তারা—

  • রাষ্ট্রীয় সম্মান

  • বিশেষ ভাতা

  • সরকারি সেবা ও চিকিৎসা সুবিধা

  • পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ
    —এইসব সহায়তা পাবে।


? কীভাবে প্রতিরোধ করা হবে জাল দাবিদারদের?

সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, মিথ্যা দাবিদারদের বিরুদ্ধে:

  • কঠোর যাচাই-বাছাই ব্যবস্থা চালু থাকবে

  • অপরাধ প্রমাণিত হলে কারাদণ্ড বা আর্থিক জরিমানা দেওয়া হবে

  • সরকারের আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে প্রকৃত ভুক্তভোগীদের অধিকার


এই অধ্যাদেশ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো গণ-আন্দোলনের শহীদ ও যোদ্ধাদের সম্মানিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ আইনি কাঠামো প্রদান করল।
একদিকে যেমন শহীদ পরিবারের জন্য রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও স্বীকৃতি নির্ধারণ হলো, তেমনি মিথ্যা দাবিদারদের প্রতিরোধ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এক নতুন ধাপ তৈরি হলো।

এই আইনি পদক্ষেপ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে।

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531