
ঘন চুল
বর্তমানে চুল পড়া ও পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা যেন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, স্ট্রেস, পুষ্টির অভাব—সব মিলিয়ে অনেকেই অল্প বয়সেই ভুগছেন চুল পড়ার যন্ত্রণা ও চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যায়। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ঘন চুলের স্বপ্ন এখন অনেকেরই। তবে কিছু অভ্যাস আর নিয়ম মেনে চললে দ্রুত নতুন চুল গজানো এবং চুলের বৃদ্ধি সম্ভব। জেনে নিন কার্যকর ৮টি উপায়—
১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
চুলের গোড়া বা ফলিকল যত শক্তিশালী হবে, চুল ততই ঘন ও স্বাস্থ্যবান হবে। ডিম, মাংস, ডাল ইত্যাদি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, সঙ্গে পালংশাক, বাদাম, বেরি-জাতীয় ফল, পর্যাপ্ত পানি খাওয়া জরুরি। এ ছাড়া বায়োটিন, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন—এই উপাদানগুলোও চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২. প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট মাথায় ম্যাসাজ
রোজমেরি, নারকেল বা ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে নিয়মিত ম্যাসাজ করলে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ে। এতে চুলের গোড়া পুষ্টি ও অক্সিজেন পায়, ফলে নতুন চুল গজায় এবং পুরোনো চুলও পড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে।
৩. চুলে অতিরিক্ত হিট ব্যবহার বন্ধ করুন
স্ট্রেট বা কার্ল করার সময় ব্যবহার হওয়া হিট চুলের গঠন নষ্ট করে ফেলে। হিটে চুল দুর্বল হয়ে ভেঙে যায়, পড়ে যায়। প্রয়োজনে হিট ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই হিট প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার করুন।
-
গরম পানি এড়িয়ে চলুন।
-
সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
-
রঙ করা চুলে প্রোটিন মাস্ক ব্যবহার করুন নিয়মিত।
৪. হেয়ার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন
চুলের ভেতরের পুষ্টির পাশাপাশি বাইরের যত্নও জরুরি। বায়োটিন, ভিটামিন ডি, জিঙ্ক, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ইত্যাদি উপাদানসমৃদ্ধ হেয়ার সাপ্লিমেন্ট চুল গজাতে ও ঘন করতে কার্যকর।
৫. নিয়মিত চুল ছাঁটাই করুন
প্রতি দেড় থেকে দুই মাসে একবার করে চুল ছাঁটলে ফাটা বা ভাঙা চুলের সমস্যা কমে। এতে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং স্বাস্থ্য ঠিক থাকে।
৬. টেনশনমুক্ত জীবন যাপন করুন
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ সরাসরি চুল পড়ার অন্যতম কারণ। নিয়মিত মেডিটেশন, ডিপ ব্রিদিং, হাঁটাহাঁটি এবং ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম মানসিক চাপ কমায়, যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৭. চুল বৃদ্ধির জন্য কিছু অতিরিক্ত উপায়
-
২-৫% মিনোক্সিডিল প্রয়োগ করলে চুল গজাতে সাহায্য করে।
-
ক্যাফেইনযুক্ত হেয়ার সিরাম ব্যবহারে চুল পড়া কমে।
-
মাঝেমধ্যে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করালে চুল শক্তিশালী হয়।
৮. ঘুমের সময় চুলের যত্ন
সুতি বালিশের চেয়ে সাটিন বা সিল্কের বালিশে ঘুমানো ভালো, কারণ এতে চুল কম ঘষে ও কম ক্ষতি হয়।
-
ভেজা চুলে ঘুমাবেন না।
-
চুল খুব আঁটসাঁট করে বাঁধবেন না।
মনে রাখবেন:
রাতারাতি ফল আশা করা ভুল। ধৈর্য ধরে নিয়মিত চর্চা করলেই মিলবে ফল। কারণ আপনার চুল শুধুমাত্র সৌন্দর্যের অংশ নয়, বরং এটি আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যচিত্রেরও প্রতিফলন। তাই যত্ন করুন ভেতর থেকে, বাইরেও রাখুন সঠিক পরিচর্যা।