ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২২ মে ২০২৫

Advertisement
Advertisement

গেজেট ঠেকাতে ইউএনওর ’নিজস্ব উদ্যোগে’ আপিল, অস্বীকার করছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা— আইন ও শৃঙ্খলা উপেক্ষিত?

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ২১ মে ২০২৫

গেজেট ঠেকাতে ইউএনওর ’নিজস্ব উদ্যোগে’ আপিল, অস্বীকার করছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা— আইন ও শৃঙ্খলা উপেক্ষিত?

ইসি

২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. এনামুল হককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ২০২৪ সালের ২৭ এপ্রিল, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানকে মেয়র ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে মাস পেরিয়ে গেলেও কমিশন সেই গেজেট প্রকাশ করেনি

এদিকে গেজেট আটকে দিতে ইউএনও মো. নাজমুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে আপিল করেন, দাবি করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশনের কোনো পরামর্শ ছাড়াই, শুধু মৌখিক নির্দেশনার ভিত্তিতে, গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি)-কে দিয়ে আপিল করানো হয়

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু আনছার এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিম দু’জনেই দাবি করেন, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং তাদের কোনো সম্মতি ছাড়াই তাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনালাপে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, “আপনার হয়ে ইউএনও আপিল করেছেন।” ফোনালাপটি মোবাইল প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থী আরিফুর রহমান রেকর্ড করে সংরক্ষণ করেছেন

আরিফুর রহমানের সঙ্গে ভুলবশত ফোনে কথা বলার সময় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান,
“ইউএনও চাচ্ছেন না নতুন মেয়র আসুক। এজন্য উনি আপনার হয়ে আপিল করেছেন।”
এছাড়া তিনি বলেন, “গেজেট হয়ে গেলে আর থামানো যাবে না। এখন যেকোনো মূল্যে ট্রাইব্যুনালের আদেশটা থামাতে হবে।”

এই আপিল প্রক্রিয়ায় ইউএনও নাজমুল ইসলাম এবং ডিসি তৌফিকুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও জেলা প্রশাসক বলেন,
“আমি আইন না দেখে কিছু বলতে পারবো না। শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।”

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন,
“কমিশনের অনুমোদন ছাড়া কোনো অফিসার ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে না। এটা স্পষ্টত নিয়মভঙ্গ।”

এছাড়া, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার বলেন, “আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। তদন্ত করে দেখতে হবে ইউএনও বা ডিসি কার হয়ে কাজ করেছেন।”

গভর্নমেন্ট প্লিডার নিজেও স্বীকার করেন,
“ইউএনও সাহেব বলার পরই আমি আপিল করেছি। চিঠি নয়, হোয়াটসঅ্যাপে কাগজ পাঠানো হয়েছিল।”

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আইন, প্রশাসন ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে উঠেছে বড় প্রশ্ন। জনপ্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে দায়িত্ব ও এখতিয়ারের সীমা, এবং তা লঙ্ঘন করলে তার পরিণতি কী হবে, সেটাই এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531