
সিদ্দিক
জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী সিদ্দিককে প্রকাশ্যে মারধর ও অপমানের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজধানী ঢাকায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, ছেঁড়া জামাকাপড়ে রাস্তায় টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হচ্ছে তাঁকে, আর সেই সময় বিক্ষুব্ধ একদল যুবক তাঁকে উদ্দেশ করে স্লোগান দিচ্ছেন—‘আওয়ামী লীগের দোসর’ উল্লেখ করে।
ঘটনাটি ঘটে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার কাকরাইল এলাকায়। ভিডিওতে দেখা যায়, একদল লোক সিদ্দিককে মারধর করে রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছে এবং একপর্যায়ে তাঁকে রমনা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। থানা হেফাজতে থাকা সিদ্দিকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আতিকুল আলম। তিনি বলেন,
“প্রায় ৪০ মিনিট আগে একদল জনতা সিদ্দিককে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাঁর জামাকাপড় ছেঁড়া ছিল। তিনি এখন আমাদের হেফাজতে আছেন।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, থানার গেটের বাইরে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখানোর পর বিক্ষুব্ধরা সিদ্দিককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এই হামলাকারীরা কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ভিডিও ফুটেজে একজনকে বলতে শোনা গেছে,
“আমরা আওয়ামী লীগের একজন দালালকে ধরেছি, পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছি।”
সিদ্দিক একজন পেশাদার অভিনয়শিল্পী হলেও তিনি বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একাধিকবার ঢাকার গুলশান ও টাঙ্গাইলের মধুপুর আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এ নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা থাকলেও তিনি কখনো সরাসরি রাজনীতির ময়দানে নামেননি।
এই ঘটনার ব্যাপারে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম জানান,
“আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানি না। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।”
আলোচনার বিষয়:
-
এভাবে একজন পরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ্যে মারধর ও অপমানের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিষ্ণুতার প্রশ্নে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।
-
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকুক বা না-ই থাকুক, একটি গণতান্ত্রিক দেশে কাউকে জনতার হাতে তুলে দেওয়া বা গণপিটুনির শিকার করার ঘটনা কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়।
-
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে সিদ্দিকের কান্না ও অসহায়ত্ব আরও বেদনাদায়ক করে তুলেছে এই ঘটনাকে।
সামনে যা জানা দরকার:
-
ঘটনার পেছনে কারা জড়িত?
-
পুলিশের তদন্তে কী উঠে আসে?
-
সিদ্দিকের বক্তব্য কী?
এই ঘটনায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিক সমাজও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।