২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নতুন কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ডেডলাইনও বেঁধে দেয়া হয়েছে।

নতুন কর্মপরিকল্পনা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বৈঠকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
- পূর্ববর্তী বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্বপালনকারীদের এবার দায়িত্ব না দেয়া।
- ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল স্থাপন।
- নির্বাচনপূর্ব বেহাত হওয়া সব অস্ত্র উদ্ধার।
- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার প্রতিরোধ ও কাউন্টার ন্যারেটিভ প্রচার।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা।
অস্ত্র উদ্ধারে চ্যালেঞ্জ
সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখনো বেহাত রয়েছে এক হাজার ৩৬৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই লাখ ৫৭ হাজারের বেশি গুলি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তথ্যদাতাদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতে উদ্যোগ নিলেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। ফলে নির্বাচনের আগে সহিংসতা ঠেকানো সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নজরদারিতে
দেশজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে বাড়তি গোয়েন্দা তৎপরতা, সিসিটিভি ক্যামেরা ও জেলা পর্যায়ে মনিটরিং সেল চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মহড়া ও সমন্বয়
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুটি প্রস্তুতিমূলক মহড়া আয়োজন করা হবে। এতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ও আনসার একসঙ্গে কাজের পরিকল্পনা অনুশীলন করবে।

বিশেষজ্ঞ মতামত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “নীতিগত সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে না পারলে আস্থার সংকট কাটবে না।”
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সরকার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, “অস্ত্র উদ্ধারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এগুলো উদ্ধার না হলে সব প্রস্তুতি সত্ত্বেও সহিংসতা ঠেকানো কঠিন হবে।”
সরকার নির্বাচনী নিরাপত্তায় নতুন কৌশল নিলেও বিশ্লেষকদের মতে মাঠপর্যায়ে নিরপেক্ষতা, সমন্বয় এবং কার্যকর অস্ত্র উদ্ধারের ওপরই নির্ভর করছে আসন্ন নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা।



.png)
.png)