ঢাকা,  শুক্রবার
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Advertisement
Advertisement

সামরিক কুচকাওয়াজে বিরল অস্ত্রের প্রদর্শনী দেখাল চীন

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সামরিক কুচকাওয়াজে বিরল অস্ত্রের প্রদর্শনী দেখাল চীন

চীনের সামরিক শক্তি

বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর উপলক্ষে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে চীন। সেখানে প্রদর্শন করা হয় চীনের সর্বাধুনিক স্টেলথ যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ নানা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, যিনি দেশটির সেনাবাহিনী ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানও, কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব দেন। তিনি প্রথমে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনসহ বিদেশি অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান। এদিন মোট ২৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রতিনিধি অংশ নেন, যাদের অধিকাংশই অ-পশ্চিমা দেশ থেকে এসেছিলেন।

শি জিনপিং বলেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথেই এগোবে। তিনি “জাপানি আগ্রাসনবিরোধী বিজয়” ও “বিশ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধের” স্মৃতিচারণ করেন এবং চীনকে সহায়তার জন্য বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম তিনি উল্লেখ করেননি।

শি আরও বলেন,

“মানবজাতি আবারও শান্তি না যুদ্ধ, সংলাপ না মুখোমুখি সংঘাত—এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। চীন সবসময় ইতিহাসের সঠিক পাশে থাকবে এবং মানব অগ্রগতির পক্ষে থাকবে।”

তিনি জানান, জাতীয় পুনর্জাগরণে সেনাবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং এটি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম মূল মতাদর্শ।

ধূসর মাও স্যুট পরে শি জিনপিং খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে সেনাদের অভিনন্দন জানান। এরপর রাজধানী বেইজিংয়ের প্রধান সড়ক চাং’আন অ্যাভিনিউ দিয়ে শুরু হয় কুচকাওয়াজ। প্রায় ৫০ হাজার দর্শক এই মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত হয় চীনের দীর্ঘপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এছাড়া ছিল আকাশে ব্যানার নিয়ে উড়ে যাওয়া সামরিক হেলিকপ্টার, যেখানে লেখা ছিল—“ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে”, “শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে” ও “জনগণ জয়ী হবে”।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞানী ইয়ান চং বলেন,

“এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে শি জিনপিং দেখাতে চাইছেন, তাঁর নেতৃত্বে চীন এখন একটি মহান শক্তি হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতি বার্তা দিচ্ছে যে চীনকে আলাদা করা যাবে না।”

এদিকে অনুষ্ঠানের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন, শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের অবদান স্বীকার করবেন কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। তিনি লেখেন,

“চীনের স্বাধীনতা অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র রক্ত ও সহায়তা দিয়েছে। বহু আমেরিকান জীবন দিয়েছেন। চীন ও এর জনগণকে আমি শুভেচ্ছা জানাই।”

তবে ট্রাম্প ব্যঙ্গ করে আরও লিখেন,

“আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা পৌঁছে দিন ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উনকে—যখন আপনারা মিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।”

রাশিয়ার ক্রেমলিন অবশ্য ট্রাম্পের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানায়, “কোনো নেতার মনেই এমন চিন্তা ছিল না।”

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531