ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২৮ আগস্ট ২০২৫

Advertisement
Advertisement

জাতীয় নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন—সিদ্ধান্তহীন ৪৮ শতাংশ ভোটার: বিআইজিডি জরিপ

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ১১ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ১৬:১৮, ১৬ আগস্ট ২০২৫

জাতীয় নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন—সিদ্ধান্তহীন ৪৮ শতাংশ ভোটার: বিআইজিডি জরিপ

নির্বাচনী জরিপ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন—এ প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশে। গত বছরের অক্টোবরে এ সংখ্যা ছিল ৩৮ শতাংশ। এ ছাড়া ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ ভোটার জানিয়েছেন, তাঁরা কার পক্ষে ভোট দেবেন তা প্রকাশ করতে চান না, আর ১ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্ম আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘পালস সার্ভে ৩’-এর ফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে দেশের রাজনীতি, নির্বাচন, সংস্কার, অর্থনীতি ও চলমান সমস্যা নিয়ে ৫ হাজার ৪৮৯ জনের মতামত নেওয়া হয়, যাদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪৭ শতাংশ নারী। জরিপটি গত ১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত হয়।

দলভিত্তিক সমর্থন কমেছে বিএনপি-জামায়াতের

জরিপে দেখা গেছে, বিএনপিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন ১২ শতাংশ, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ ভোটার। গত বছরের অক্টোবরে বিএনপির সমর্থন ছিল ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ, জামায়াতের ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং এনসিপির ২ শতাংশ। অর্থাৎ বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছুটা কমেছে, এনসিপির ভোট সামান্য বেড়েছে।

আওয়ামী লীগের সমর্থন গত অক্টোবরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে নেমে এখন ৭ দশমিক ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় পার্টির সমর্থন ০ দশমিক ৭০ থেকে কমে ০ দশমিক ৩০ শতাংশ, আর অন্যান্য ইসলামি দলের ভোট ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ০ দশমিক ৭০ শতাংশ।

জয়ের সম্ভাবনায় এগিয়ে বিএনপি

আপনার এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে—এমন প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ ভোটার বিএনপির কথা বলেছেন। জামায়াতের পক্ষে ১৩ শতাংশ, এনসিপির পক্ষে ১ শতাংশ এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে ৭ শতাংশ ভোটার মত দিয়েছেন।

রাজনৈতিক আশাবাদ কমেছে

দেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে কি না—এ প্রশ্নে ৪২ শতাংশ বলেছেন রাজনৈতিকভাবে দেশ সঠিক পথে আছে, যা গত অক্টোবরে ছিল ৫৬ শতাংশ। তবে অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে মনে করেন ৪৫ শতাংশ, যা গত অক্টোবরে ছিল ৪৩ শতাংশ।

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে সন্তুষ্টি জানিয়ে গড়ে ৬৩ শতাংশ নম্বর দিয়েছেন উত্তরদাতারা, যা গত অক্টোবরে ছিল ৬৮ শতাংশ।

নির্বাচনের আগে সংস্কার চান বেশিরভাগ

ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ ভোটার, কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ, আর ১৪ শতাংশ মনে করেন সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হওয়া উচিত।

সংস্কারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন (৩০ শতাংশ), দুর্নীতি দমন (১৭ শতাংশ), অর্থনীতি ও ব্যবসা চাঙা করা (১৬ শতাংশ), বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন (১৬ শতাংশ), নিত্যপণ্যের দাম কমানো (১৩ শতাংশ) ও বেকারত্ব কমানো (১০ শতাংশ)।

নির্বাচনের সময় নিয়ে বিভাজন

ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান ৩২ শতাংশ, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে চান ১২ শতাংশ, জুনের মধ্যে চান ১১ শতাংশ, আর ডিসেম্বর ২০২৬ বা পরে চান ২৫ শতাংশ।

সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে আশাবাদ

৭০ শতাংশ ভোটার মনে করেন জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। ১৫ শতাংশ মনে করেন হবে না, আর ১৪ শতাংশ এ বিষয়ে অনিশ্চিত।

অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরেন বিআইজিডির ফেলো অব প্র্যাকটিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531