
মানুষের শরীরে প্রথমবার শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানীরা মানুষের চিকিৎসায় প্রাণীর অঙ্গ ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। এবার চীনের গুয়াংজু মেডিকেল ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা প্রথমবারের মতো একজন ব্রেন ডেড (মস্তিষ্ক মৃত) ব্যক্তির শরীরে শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেছেন।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রতিস্থাপনের পর ফুসফুসে জটিলতা দেখা দিলেও অঙ্গটি কিছুটা কাজ করেছে। নয় দিন পর প্রতিস্থাপিত ফুসফুসটি সরিয়ে ফেলা হয়। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী নেচার-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা এ পরীক্ষাকে ‘দারুণ অগ্রগতি’ আখ্যা দিলেও সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন। এনওয়াইইউ গ্রসম্যান স্কুল অব মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক স্টেফানি চ্যাং বলেন, এটি সম্ভাবনাময় পদক্ষেপ হলেও কার্যকর করে তুলতে আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন।
কেন ফুসফুস প্রতিস্থাপন কঠিন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুসফুস মানুষের শরীরের সবচেয়ে জটিল অঙ্গগুলোর একটি। বাতাসের দূষণ, ধুলা, ভাইরাসসহ বহির্বিশ্বের সংস্পর্শে থাকার কারণে এতে প্রতিরোধ ব্যবস্থার চাপ অনেক বেশি থাকে। এ কারণে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে মৃত্যুহারও বেশি। সাধারণত মানুষ থেকে মানুষের ফুসফুসও মাত্র ৫ থেকে ৭ বছর টিকে থাকে।
অঙ্গের ঘাটতি
বিশ্বজুড়ে ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য মানব অঙ্গের ঘাটতি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেই কয়েক লাখ মানুষ মারাত্মক ফুসফুসের রোগে ভুগছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত দাতার অভাবে অনেক রোগী মারা যান।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
এর আগে গবেষকেরা মানুষের শরীরে শূকরের হৃৎপিণ্ড, কিডনি ও যকৃত প্রতিস্থাপনেও আংশিক সাফল্য পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের গবেষকেরা জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত শূকরের অঙ্গ নিয়ে একাধিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অঙ্গের ঘাটতি মোকাবিলায় এ গবেষণা ভবিষ্যতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারে।