
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এই ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের চারদিনব্যাপী উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়াকে পারমাণবিক সংঘাতের মুখে ঠেলে দিয়েছিল। সেই ঘটনার পর এবারই প্রথমবারের মতো একই দিনে জাতিসংঘ মঞ্চে বক্তব্য দেবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, সকালে বক্তব্য রাখবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর বিকেলে একই অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এতে ইসলামাবাদের হাতে দিল্লির বক্তব্যের সরাসরি জবাব দেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। একই দিনে বিকেলে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। তার সঙ্গে থাকবেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার ও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। তবে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথম দিনে ব্রাজিল বক্তব্য রাখবে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ভাষণ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘একসাথে ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরও বেশি।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদি ও শেহবাজ শরিফের বক্তব্য দুই দেশের অবস্থানের পার্থক্য স্পষ্ট করবে। ভারত সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ইস্যুতে জোর দেবে, আর পাকিস্তান প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মির ও আঞ্চলিক শান্তির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে।
একজন জ্যেষ্ঠ পাকিস্তানি কূটনীতিক দ্য ডন-কে বলেন, বিশ্ব দেখেছে দক্ষিণ এশিয়া কত দ্রুত সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কাশ্মির সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান ছাড়া জাতিসংঘের শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি আমাদের অঞ্চলে পূর্ণ হবে না।”
এদিকে অধিবেশনে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ, ইউক্রেন সংঘাত এবং সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনাও গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ অধিবেশন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তির আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।