
মোদি
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে যে, শিঙাড়া, জিলাপি, লাড্ডু, পকোড়া এবং অন্যান্য তেল ও চিনিযুক্ত খাবারগুলোর পুষ্টিমান — যেমন তেল, চিনি, ক্যালোরি ও ট্রান্স‑ফ্যাট — কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে দোকানে পর্যাপ্তভাবে প্রদর্শন করতে হবে, যাতে ক্রেতা সচেতনভাবে নির্বাচন করতে পারে ।
বিতর্ক বিস্তার ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
নির্দেশিকাটি প্রকাশের পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং বাজারে ছড়িয়ে পড়ে খবর যে, সিগারেটের মতো ‘রেড ওয়ার্নিং লেবেল’ লাগানো হবে, কিংবা কিছু খাবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে চলেছে মোদি সরকার ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডলে স্পষ্ট করে জানান:
“শিঙাড়া, জিলাপি খাওয়া যাবে না—এই কোনও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞপ্তি নয়। তা কার্যকরও করা হবে না। মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়।”
এর ফলে বিতর্ক আরো উত্তপ্ত হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাখ্যা
Press Information Bureau (PIB) দ্রুত জানায়, এমন কোনো নির্দেশিকা জারি হয়নি; এটা ছিল শুধু সতর্কীকরণ, যাতে মানুষ বুঝতে পারে খাবারে লুকানো স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে ।
এছাড়া স্পষ্ট করা হয় যে এই ধরনের লেবেল স্ট্রিট ফুড বা ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্নে প্রযোজ্য নয়; বরং শুধুমাত্র সংস্কারিত প্যাকেজজাত খাবারের জন্য ভবিষ্যতে প্রস্তাবিত নতুন নিয়ম। সেখানে স্ট্রিট খাবার অন্তর্ভুক্ত নেই ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিভঙ্গি
নাগপুর কন্সিডিওলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ডা. অমর আমলে বলেন:
“চিনি এবং ট্রান্স‑ফ্যাট আজকের নতুন তামাক। মানুষকে জানতে হবে তারা কী খাচ্ছে”—এই উদ্যোগকে তিনি জরুরি বলে বর্ণনা করেছেন ।
আলাদা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সতর্কবাণী ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ ছাড়িয়ে আরও অসুখের সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরছে—যেমন হাড়ফাঁটা ক্ষুধ, মেদ, হরমোনীয় ব্যালান্স বিশৃঙ্খলা এবং ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি ।
? সারাংশ
-
নিষেধাজ্ঞা নয়: রাজ্য বা কেন্দ্র কোনভাবেই শিঙাড়া, জিলাপি খাওয়ার বাতিল ঘোষণা করেনি।
-
সতর্কতা বার্তা মাত্র: নির্দেশিকা ছিল সাধারণ “Oil & Sugar Board” লাগানোর, যাতে খাবারের উপাদান ও ক্যালোরি জানিয়ে দেওয়া যায়।
-
রাজনৈতিক উত্তেজনা: বিভ্রাটমূলক খবর সামাজিক ও রাজনৈতিক স্তরে ভাইরাল হওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়।
-
জনস্বাস্থ্য সচেতনতা: নির্দেশিকার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করা।
এই বিতর্ক তুলে ধরছে, কীভাবে একটি নীতিমালা যদি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা দ্রুত সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্তাপের ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার ও PIB‑এর দ্রুত ব্যাখ্যার ফলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যসচেতনতা তৈরির মতো লক্ষ্যগুলোর গুরুত্বও অস্বীকার করা যায় না।