
ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করার দাবি করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, “ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।” একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “যদি শান্তি না আসে, তাহলে আরও বড় ট্র্যাজেডি অপেক্ষা করছে।”
তিনি বলেন, “আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা এবং দক্ষতার সঙ্গে অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে প্রস্তুত। এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাষণে ইরানের প্রভাবশালী সাবেক সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে ‘হাজার হাজার মানুষের হত্যাকারী’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “আমি অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এই সন্ত্রাসবাদ আর চলবে না। এটা বন্ধ করতে হবে।”
তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই ভয়াবহ হুমকি মুছে ফেলার জন্য তারা একটি দল হিসেবে কাজ করছেন।”
ইরানের পাল্টা জবাব: ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের এই আক্রমণের পরই ইরান পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ কয়েকটি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালায়।
লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয় সেনাবাহিনীর সহযোগী ঘাঁটি, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং একটি জৈবিক গবেষণা কেন্দ্র। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ইরান থেকে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে শনাক্ত করেছে এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
তেল আবিব ও জেরুজালেমে সাইরেন, আহত ১১
ইরানের হামলার সময় তেল আবিবে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং জেরুজালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় ইসরায়েলে ১১ জন আহত হয়েছে।
উত্তেজনার শীর্ষে মধ্যপ্রাচ্য
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে তুলে দিয়েছে। ইসরায়েলের পাশে অবস্থান নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থানের বিপরীতে ইরানও সরাসরি জবাব দেওয়া শুরু করেছে। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে তা কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।