
এসএসসির ফল প্রকাশ
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে কোনো শিক্ষার্থীকে গ্রেস মার্কস বা অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়নি। নম্বর ৭৯ হলেও তা ৮০-তে উন্নীত করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা খাতায় যা লিখেছে, ফলাফলেও তা-ই প্রতিফলিত হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থায় প্রকৃত মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়নের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমরা যে ফল প্রকাশ করেছি, সেটিই প্রকৃত ফল। উত্তরপত্র যথাযথভাবে মূল্যায়নের পর যেটি এসেছে, সেটিই দেওয়া হয়েছে। কোনো অতিরিক্ত নম্বর বা গ্রেস মার্ক দেওয়া হয়নি।”
চেয়ারম্যান আরও জানান, ফল প্রস্তুতিতে পরীক্ষকদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল— খাতায় যা আছে, কেবল সেই নম্বরই দিতে হবে। কোনোভাবে নম্বর বাড়িয়ে ভালো গ্রেড দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি।
‘গ্রেস’ বাদ দিয়ে ‘খাঁটি’ ফলাফল প্রকাশ
পূর্বের ফলপ্রক্রিয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে অধ্যাপক এহসানুল কবির বলেন, এবার কোনো ধরনের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক কিংবা বোর্ডের অভ্যন্তরীণ চাপ ছাড়াই প্রকৃত নম্বরই প্রকাশ করা হয়েছে।
“আমরা চাই সত্যিকারের মেধার মূল্যায়ন হোক। তাই কোনো উদারনীতি বা নম্বর সমন্বয়ের আশ্রয় নেওয়া হয়নি,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, কেউ যদি এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ হন বা সন্দেহ প্রকাশ করেন, তাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “এই ফলে কোনো সংশয় থাকার কথা নয়। এটি খাঁটি ফলাফল।”
আগের নিয়মে দেওয়া হতো নম্বর বাড়িয়ে পাস
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের একাধিক বিষয়ে গ্রেস মার্কস দেওয়া হতো। অনেক সময় ১ থেকে ৫ নম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে জিপিএ উন্নয়ন বা পাস করানো হতো। কিন্তু এবার সে সুযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
‘নকলমুক্ত পরীক্ষা, কঠোর তদারকি’ — বরিশাল বোর্ড
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, “এবার পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্র তদারকিতে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রতিটি অঞ্চল কঠোরভাবে কাজ করেছে।”
তিনি বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে এবার স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল— শিক্ষার প্রকৃত মান যাচাই করতে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া যাবে না। সেই অনুসরণেই আমরা ফল তৈরি করেছি। এবার যে ফল এসেছে, সেটি শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অবস্থা প্রতিফলিত করেছে।”
এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে উদারনীতির জায়গায় এসেছে স্বচ্ছতা ও কঠোরতা। খাঁটি মেধার ভিত্তিতে ফল প্রকাশের এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি নতুন আস্থার দিকনির্দেশনা তৈরি করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।