ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০৩ অক্টোবর ২০২৪

Advertisement
Advertisement

সাগরে হুতিদের একের পর এক হামলায় বিপর্যস্ত ইসরায়েলের অর্থনীতি

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাগরে হুতিদের একের পর এক হামলায় বিপর্যস্ত ইসরায়েলের অর্থনীতি

জাহাজ

ইয়েমেনি বাহিনী নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে ইসরাইলের সাথে সম্পর্কযুক্ত ৮০টিরও বেশি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনিরা দুটি জাহাজ ডুবিয়েছে এবং আরেকটি জাহাজ জব্দ করেছে। নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে ইয়েমেনি যোদ্ধাদের হামলার কারণে অনেক শিপিং কোম্পানি তাদের জাহাজের এই আন্তর্জাতিক জলপথ ত্যাগ করে আফ্রিকা মহাদেশের চারপাশে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছে।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, জাহাজ চলাচলে ইয়েমেনি বাহিনীর এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইসরাইলের দৈনিক ১ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। জাহাজ চলাচলের রুট পরিবর্তন করে তা আফ্রিকা মহাদেশ হয়ে ঘুরে যাওয়ায়  বাণিজ্য ক্ষেত্রে ইসরাইল ব্যাপক ক্ষতির সম্মখীন হয়েছে। ইসরাইল বিকল্প পথ খুঁজে নিতে বাধ্য হওয়ায় তাদের পরিবহন খরচ বহুগুণে বেড়েছে।

এই বিষয়ে, ইসরাইলি গণমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ইয়েমেনিদের এই পদক্ষেপের ফলে ইসরাইলি শিপিং কোম্পানিগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে একইসাথে  ইয়েমেনিরা ইসরাইলি বন্দরে হামলার পরিমাণ তিনগুণ বাড়িয়েছে। লোহিত সাগরে ইসরাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট জাহাজে ইয়েমেনিদের  হামলার ফলে আফ্রিকা হয়ে দেরি করে জাহাজ পৌঁছানোয় ইসরাইলের হাইফা বন্দরের কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে এবং সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। যে জাহাজটি এক সপ্তাহের মধ্যে হাইফা বন্দরে পৌঁছতে পারতো সেটি এখন তিন সপ্তাহ পর হাইফা বন্দরে পৌঁছায়। ইসরাইলি মিডিয়ার এ রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ইসরাইলের দিকে অগ্রসর হওয়া জাহাজগুলোর বীমা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, ফলে এই বীমাগুলোর ব্যয় এতো বেড়েছে যা একটি জাহাজের মোট মূল্যের প্রায় ৬৫ শতাংশে পৌঁছে।

এ কারণে ইসরাইলের ইলাত বন্দরের শিপিং আয়ও ৮৫ শতাংশ কমেছে। অথচ এই বন্দরটি কেন্দ্রিয় ইসরাইলের সাথে পূর্বাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র বন্দর। এদিকে, ইয়েমেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে গাজায় হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত লোহিত সাগরে ইসরাইলগামী জাহাজে হামলা অব্যাহত থাকবে। গাজার সমর্থনে ইয়েমেনি সেনাবাহিনী, ৩১ অক্টোবর থেকে আক্রমণ শুরু করে এবং এখন পর্যন্ত  তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ায় লোহিত সাগরে ইসরাইল বিরোধী অবরোধ ভেঙ্গে দেয়ার মার্কিন ও ব্রিটেনের  প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি আমেরিকা ও ব্রিটেন ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালিয়েও ওই অবরোধ ভাঙতে পারেনি উল্টো আমেরিকা ও ব্রিটেনের জাহাজ ইয়েমেনিদের হামলার টার্গেটে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন অভিযান সম্পর্কে তাদের সামরিক শক্তি সম্পর্কেও ওয়াশিংটন ও লন্ডন ধারণা পেয়েছে যা তাদের আগে জানা ছিল না। ফলে পাশ্চাত্যের হিসাব নিকাশ পাল্টে গেছে।

ওয়াশিংটন লোহিত সাগর এবং আরব সাগরে চলাচলকারী জাহাজের নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলে তথাকথিত আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক জোট তৈরি করেছিল, কিন্তু এই জোট ইয়েমেনি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে টিকতে পারেনি।

যাইহোক, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ‌আমেরিকা ও ব্রিটেনসহ ইসরাইলগামী জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে যাবে বলে ইমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা জানিয়ে দিয়েছে। তবে একই সাথে তারা এও বলেছে, ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক নেই এমন জাহাজগুলো অনায়াসে চলাচল করতে পারবে।#

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_05/p1kq0rsou/public_html/details.php on line 531