ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

Advertisement
Advertisement

চঞ্চল শিশুদের দুর্ঘটনা এড়াতে মেনে চলবেন যেসব নিয়ম

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চঞ্চল শিশুদের দুর্ঘটনা এড়াতে মেনে চলবেন যেসব নিয়ম

ছবিঃ সংগৃহীত

হামাগুড়ি দিতে শেখার পর থেকেই শিশুদের সবকিছুতে আগ্রহ বাড়তে থাকে। হঠাৎ জানালার বাইরে ছোট্ট পাখি দেখল অমনি হামাগুড়ি দিয়ে জানালার দিকে ছুটে যায়। হয়তো দেখল ঘরের এক কোণে রাখা একটি পাত্র, হাঁচড়েপাঁচড়ে সেখানে পৌঁছেই ডুবিয়ে দিল মাথা। কিংবা হঠাৎ মাল্টিপ্লাগের ছিদ্রে পুরে দিলো আঙুল। ঘরের জুতা-স্যান্ডেল কামড়ানো দেখলে মনে হবে, এটাই বুঝি দুনিয়ার সবচেয়ে সুস্বাদু বস্তু। আর ছোটখাটো জিনিস মুখে পুরে দেয়াটা তো নৈমিত্তিক রুটিন। শিশুর ছটফটানির বয়সটা তাই অভিভাবকের জন্য বড্ড মুশকিলের। অসাবধানে কোথাও কিছু ফেলে রাখার জো নেই। কী থেকে কী ঘটে যাবে, কে বলতে পারে!
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালট্যান্ট তাসনুভা খান জানান, তিন মাস বয়সেই শিশু নিজের হাত মুখে দিতে শুরু করে। শিশুর নখটাও বাড়ে দ্রুত। আর নখে সহজেই জমে যায় ময়লা। তাই একটু বেড়ে গেলেই নখ কেটে দিতে হবে। ৫-৬ মাস বয়স হলে খেলনা বা হাতের কাছের অন্যান্য জিনিসও মুখে দেয় শিশু। শিশুর হাতের কাছে যা কিছু থাকবে, সেগুলোও পরিষ্কার রাখা তাই খুব জরুরি। ৮-১০ মাসে হামাগুড়ি দিতে শেখে শিশু। এই সময় থেকে শিশুর নিরাপত্তায় প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা।আর এই সতর্কতা শিশু স্কুলে যাওয়ার বয়স পর্যন্ত অবশ্যই জরুরি।
শিশু ঘুমিয়ে থাকলে বালিশ দিয়ে ঘিরে রাখবেন। তাহলে হঠাৎ ঘুম ভেঙে হামাগুড়ি দিতে গেলেও পড়ে যাবে না। জেগে থাকলে মেঝেতেই ‘ছুটতে’ দিন নিজের মতো। ঠান্ডা মেঝেতে ম্যাট বিছিয়ে দিন। মেঝে যেন পিচ্ছিল না থাকে। কাচ বা সিরামিকের জিনিস ভেঙে গেলে টুকরাগুলোকে সরিয়ে ফেলুন দ্রুত। আসবাবের কোনায় আঘাত লাগার ভয় থাকলে সেখানে ফোমজাতীয় কিছু আটকে দিতে পারেন।
পয়সা, মার্বেল, জামার বোতাম, ছোট পাথর, খেলনার ছোট ব্লক, বোতলের ছিপি, ক্লিপ, এমনকি আলপিন জাতীয় জিনিসও মুখে দেয় শিশু। এগুলো শ্বাসনালিতে আটকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। খেলনার ছোটখাটো অংশ কিংবা রবারের পরত খুলে গিয়েও ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। খেলনা বাছাইয়ের সময় এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখার প্রতি জোর দিলেন তাসনুভা খান। শক্ত খাবার, ফলের বীজ, মটরদানার মতো দানা, এমনকি কাপড়ের টুকরা বা টিস্যু পেপার মুখে গেলেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানালেন তিনি। ওষুধ, মস্কিউটো রিপেল্যান্ট, জীবাণুনাশক দ্রবণ, কেরোসিন সাবধানে রাখতে হবে। পানীয়ের বোতলে কেরোসিন, তরল ডিটারজেন্ট, জীবাণুনাশক দ্রবণও শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে। পোকামাকড় দেখলে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। শিশুরা সেটিকেও মুখে পুরে ফেলতে পারে পারে।

শিশুকে খেলনা দেয়ার আগে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। খেলা শেষে আবার পরিষ্কার, বদ্ধ বাক্সে তুলে রাখুন। শিশু অসুস্থ হলে তার খেলনা অন্য শিশুকে দেবেন না।

বঁটি, চাকু, কাঁচি, কাঁটাচামচ কিংবা অন্য কোনো ধারালো বা চোখা জিনিস সাবধানে রাখতে হবে। তরকারি কাটার সময় হঠাৎ ফোন এসেছে বা কলবেল বাজছে? ‘বটিটা এভাবেই থাক, যাব আর আসব।’ এমনটা ভুলেও ভাববেন না। নিমেষেই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।

মশা মারার স্প্রে প্রয়োগের সময় শিশুকে অন্য ঘরে রাখবেন। স্প্রে করার ঘণ্টাখানেক পর শিশুকে সেখানে যেতে দিন। শিশুর ত্বকে মস্কিউটো রিপেল্যান্ট দেবেননা, চাইলে রিপেল্যান্ট হিসেবে কাপড়ে লাগানোর উপযোগী উপাদান বেছে নিতে পারেন। তবে কেনার সময়ই দেখে নিন, এগুলো শিশুবান্ধব কিনা। মশা তাড়ানোর কয়েল থেকে দুর্ঘটনার ভয় থাকে। এবং কয়েলের গুঁড়াও বাড়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি।

পাত্রে পানি ধরে রাখার প্রয়োজন হলে পাত্রের মুখ খুব ভালোভাবে আটকে রাখুন, যাতে অসাবধানতাবশত শিশুর মাথা-মুখ নিমজ্জিত হওয়ার ঝুঁকি না থাকে। বাড়ির কাছে জলাশয় থাকলে কিংবা বৃষ্টি-বন্যার পানি উঠলে এই বয়সী শিশুদের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখুন।
Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_05/p1kq0rsou/public_html/details.php on line 531