
আকতার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। স্থানীয় সময় বুধবার দিবাগত রাত ১টায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা) জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের পাশে পোর্ট অথরিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থানায় তিনি এ মামলা দায়ের করেন।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় আখতার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জেএফকে বিমানবন্দরে হামলার পর একই দিন সন্ধ্যায় হোটেলের লবিতেও হামলার চেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা। তবে এনসিপির স্থানীয় সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতিরোধে তারা ব্যর্থ হয়। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আখতার হোসেন মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ করেছেন এবং আরও ১৫–২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, শুধু বিমানবন্দরেই নয়, পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায়ও তাকে হেনস্তার চেষ্টা করা হয়েছে।
ভিডিও বার্তায় আখতার আরও দাবি করেন,
“যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছেন, তাঁরা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তারা দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিল। আমরা বিষয়টি ইউএস পুলিশকে জানিয়েছি এবং জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট রিপোর্টও অবহিত করেছি।”
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সহিংস কর্মকাণ্ডের বিচার আইনের মাধ্যমে হবে এবং দলটি আর সন্ত্রাস নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না।
ঘটনার বিবরণ
২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার দিকে জেএফকে বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়েন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানকে ডিম ছুড়তে দেখা গেছে। পরে এক বিএনপি কর্মীকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে তাকে আটক করা হলেও তিনি ছাড়া পান।
ঘটনার সময় আখতার হোসেনের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি ও বিক্ষোভ করেন।
প্রেক্ষাপট
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন নিউইয়র্কে গিয়েছেন। বর্তমানে ইউনূস ও তাঁর সফরসঙ্গীরা ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, একই সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগও অনুমতি নিয়ে ওই এলাকায় বিক্ষোভ করে। সেখানেও এনসিপি ও আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা মুখোমুখি স্লোগান দেয়।
আখতার হোসেন ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা দেশে–বিদেশে যেখানেই অপরাধ করুক, তাদের আইনগত প্রতিকার নিশ্চিত করা হবে।