ঢাকা,  শনিবার
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Advertisement
Advertisement

রাইয়ান মোস্তাকিন: বাংলাদেশের একমাত্র ভাগ্যবান শিশু যে লটারিতে পেল বিরল রোগের ওষুধ

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাইয়ান মোস্তাকিন: বাংলাদেশের একমাত্র ভাগ্যবান শিশু যে লটারিতে পেল বিরল রোগের ওষুধ

রোগ

মানিকগঞ্জের মো. রফিকুল ইসলাম ও রিনা আক্তারের ছেলে রাইয়ান মোস্তাকিন জন্মগ্রহণ করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর। জন্মের কিছুদিন পর থেকেই তার মা ও দাদি খেয়াল করেন, শিশুটি স্বাভাবিক নয়—হাত–পা নরম, পেশি শক্তি নেই। বিভিন্ন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পর নয় মাস বয়সে তাকে আনা হয় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে। সেখানে শনাক্ত হয় তার বিরল জিনগত রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (এসএমএ)

বিরল রোগ ও ব্যয়বহুল ওষুধ

এসএমএ রোগের চিকিৎসায় বিশ্বে মাত্র তিনটি স্বীকৃত বিকল্প রয়েছে:

  1. রোশের সিরাপ

  2. বায়োজিনের ইনজেকশন

  3. নোভার্টিসের জিন থেরাপি – জোলজেনএসএমএ (ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ)

জোলজেনএসএমএ বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধগুলোর একটি। বাংলাদেশে এটি কিনতে হলে প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ করতে হয়।

লটারিতে ওষুধ পাওয়া

নোভার্টিস ২০২০ সালে বৈশ্বিক কর্মসূচি ‘গ্লোবাল ম্যানেজড অ্যাক্সেস প্রোগ্রাম’ চালু করে, যার মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারের রোগীদের লটারির মাধ্যমে বিনা মূল্যে জোলজেনএসএমএ দেওয়া হতো। শর্ত ছিল:

  • শিশুর বয়স দুই বছরের কম হতে হবে

  • জিন পরীক্ষায় এসএমএ নিশ্চিত হতে হবে

  • ওষুধটির অনুমোদন সংশ্লিষ্ট দেশে না থাকতে হবে

এই কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০টি দেশের ৩০০ শিশু বিনা মূল্যে ওষুধ পায়। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে একমাত্র ভাগ্যবান শিশু হলো রাইয়ান মোস্তাকিন

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক (শিশু স্নায়ুরোগ বিভাগ) জুবাইদা পারভীন ছয় শিশুর হয়ে লটারিতে আবেদন করেছিলেন, এর মধ্যে নির্বাচিত হয় রাইয়ান।

চিকিৎসার পর পরিবর্তন

২০২২ সালের অক্টোবর মাসে রাইয়ানের শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে জোলজেনএসএমএ প্রয়োগ করা হয়। চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। হাত–পা শক্ত হয়েছে, এখন বসতে পারে। চিকিৎসকরা আশা করছেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার জিনগত ত্রুটি আরও দূর হবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে।

বাংলাদেশের আরেক শিশুর কাহিনি

হাসপাতাল ও নোভার্টিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আরও একটি শিশু জোলজেনএসএমএ পেয়েছে। তবে সে লটারির মাধ্যমে নয়, বরং সমঝোতা মূল্যে ওষুধটি কেনা হয়েছে। শিশুটির বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল এ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে।

কর্মশালায় অংশগ্রহণ

২০২৫ সালের ২৩–২৪ আগস্ট হাসপাতালটিতে এসএমএ রোগী ও অভিভাবকদের জন্য আয়োজিত কর্মশালায় রাইয়ান বাবা–মা ও দাদিকে নিয়ে অংশ নেয়। সেখানে উপস্থিত চিকিৎসকরা জানান, জিন থেরাপির পর রাইয়ানের উন্নতি উল্লেখযোগ্য।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531