
মোবাইল ব্যবহার
‘এখন ঘুমিয়ে পড়, এত রাতে মোবাইল দেখিস কেন?’—এই প্রশ্নটা নিশ্চয়ই বড়দের মুখে প্রায়ই শুনে থাকো। যদি না শুনে থাকো, তাহলে তুমি হয়তো বেশ নিয়ম মেনে চলো।
কিন্তু জানো কি, রাতে ঘুমানোর সময় মোবাইল ব্যবহার করা শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর?
অনেকেই ভাবে, মোবাইলের স্ক্রিনের আলোই ঘুমের ক্ষতি করে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, শুধু স্ক্রিন নয়—তুমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কীভাবে যুক্ত আছো, সেটাই আরও বেশি ক্ষতি করে।
রাত জেগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, রিলস, গেমস এসব দেখলে ঘুমের সময়টা নষ্ট হয়। কিশোরদের দিনে ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম দরকার, আর বড়দের দরকার ৭-৯ ঘণ্টা। কিন্তু মোবাইল ব্যবহার করে ঘুম ঠিকমতো না হলে ক্লান্তি, মন খারাপ, রাগ, মনোযোগের অভাব—এসব সমস্যা দেখা দেয়। পড়াশোনায়ও মন বসে না।
তাহলে সমস্যা কোথায়?
১. মনোযোগের মাত্রা: স্ক্রিনে কতক্ষণ ছিলে, তার চেয়েও বড় কথা—তুমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কতটা মনোযোগ দাও।
২. নোটিফিকেশনের ফাঁদ: রাতে ঘুমাতে গিয়ে মোবাইল পাশে রাখলে, ছোট্ট একটা ‘টং’ শব্দেই তুমি আবার স্ক্রিনে ঢুঁ মারো। এভাবে ঘুমের চক্র ভেঙে যায়।
৩. অন্যদের সঙ্গে তুলনা: কার ছবি কেমন, কে কী করল—এসব দেখে নিজের জীবনের সঙ্গে তুলনা করে মন খারাপ হয়।
৪. উত্তেজনার কারণে ঘুম বিলম্ব: আবেগময় কনটেন্ট দেখে মন অস্থির হয়ে যায়, ঘুম আসতে চায় না।
5. FOMO (Fear of Missing Out): মনে হয় কিছু মিস করে ফেলছি! এই ভাবনায় অনেকেই রাত জাগে।
তাহলে কী করণীয়? ঘুম ফেরাতে ছোট কিছু অভ্যাস বদলাও:
-
ঘুমাতে যাওয়ার ৩০-৬০ মিনিট আগে মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করো।
-
‘ডু নট ডিস্টার্ব’ মোডে মোবাইল রেখে দাও হাতের বাইরে।
-
অকারণে স্ক্রল বন্ধ করো—নিজেকে জিজ্ঞেস করো, এখন এটা দেখা জরুরি কি না।
-
ঘুমানোর আগে বই পড়ার অভ্যাস করো। গোয়েন্দা গল্প বা মজার কিছু হলেও চলবে—তবে মোবাইলে নয়!
একটু চেষ্টা করলে রাতের ঘুম ফিরিয়ে আনতে পারো। মোবাইলকে বন্ধু বানাও, শত্রু নয়।