
হারজিত কর
তিন দশকেরও বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটানোর পর হঠাৎ করেই তাঁকে আটক করে ভারতে পাঠিয়েছে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। এ ঘটনায় শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
হারজিত কর ১৯৯১ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে বাঁচতে দুই ছেলেকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় যান। সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকার হারকিউলিস শহরে তিনি বসবাস করছিলেন। প্রায় দুই দশক ধরে স্থানীয় একটি শাড়ির দোকানে সেলাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। নিয়মিত করও দিয়েছেন।
আইনজীবী দীপক আহলুয়ালিয়ার অভিযোগ, হারজিত কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না। তবুও ৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে আটক করে জর্জিয়ার একটি আটককেন্দ্রে রাখা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁকে অমানবিক পরিস্থিতিতে থাকতে হয়—ঘুমানোর জন্য বিছানা দেওয়া হয়নি, ওষুধের পরিবর্তে বরফ দেওয়া হয়েছে, খাওয়ার উপযোগী খাবার পাননি। প্রহরীরা এমনকি তাঁকে স্যান্ডউইচ খাওয়ার জন্যও দোষারোপ করেন। ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে হঠাৎ করেই ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। এ সময় তিনি বাড়ি ফেরার বা পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সুযোগ পাননি।
আইসিই জানিয়েছে, হারজিত করের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আইনগত প্রক্রিয়া চলছিল। ২০০৫ সালে এক অভিবাসন বিচারক তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের আদেশ দিয়েছিলেন। তবে তাঁর আইনজীবীর মতে, এত বছর ধরে আশ্রয়ের আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকায় তিনি বৈধভাবেই বসবাস ও কাজ করছিলেন।
এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শিখ সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেছে। তাঁদের দাবি, হারজিতের মতো শান্তিপ্রিয় ও করদাতা অভিবাসীরা ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির শিকার হচ্ছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি "সবচেয়ে খারাপ মানুষদের" নির্বাসিত করতে চান। কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, অপরাধে জড়িত নন এবং আইনগত প্রক্রিয়া মেনে চলা অভিবাসীরাও এখন এই নীতির লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আদালতে প্রায় ৩৭ লাখ মামলা চলমান, যার মধ্যে হারজিত করের ঘটনাও নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।