পুরুষ
পুরুষের বুক হবে সমতল বা সামান্য উঁচু হবে এটা ধরেই নেয়া হয়। কিন্তু কারও স্তন যদি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং অনেকটা নারীসুলভ হয়ে যায়, তখন তা বিব্রতকর হয়ে উঠে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় আমরা একে বলি গাইনেকোমাস্টিয়া।
এর কারণ ও সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন মনোয়ারা হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক (প্লাস্টিক সার্জারি), শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং কনসালট্যান্ট ডা. মাসরুর-উর-রহমান আবীর।
তিনি বলেন, নবজাতক অবস্থায় বাচ্চা ছেলে এবং বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের স্তন এমন অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। যেটি সাধারণত দু-তিন বছরের মধ্যেই কমে যায়। এ ছাড়া প্রৌঢ়ত্বে বয়স্ক পুরুষদের মধ্যেও এ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকালে এই বৃদ্ধি হলেও তা আবার স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কথা। তবে যদি ১৮ বা ২০ বছর বয়সেও তা স্বাভাবিক না হয়, তখন এটিকে অস্বাভাবিক বলা যায়। আর যদি পোশাকের বাইরে থেকেও এটি বোঝা যায় এবং তা নিয়ে সেই তরুণ সামাজিকভাবে বিব্রত হন, তখন এটির চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
কেন হয় এ সমস্যা?
অনেক সময় হরমোনজনিত কিছু নির্দিষ্ট রোগের কারণে এমন অসুবিধা হতে পারে। শরীরে কিছু দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে কিংবা অনেক দিন কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ সেবন করলেও এ রকম হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে বা হরমোনজনিত নির্দিষ্ট কারণ থাকলে এন্ডোক্রাইনোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। তবে এসব চিকিৎসায় সমাধান না হলে কিংবা সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া না গেলে শল্যচিকিৎসাই শেষ সমাধান।
স্তনের যে গ্লান্ড বা গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য এ পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা অপারেশন করে অপসারণ করতে হয়। এ অপারেশনের আগে ছিদ্র করে লাইপোসাকশনের মাধ্যমে গ্রন্থির কিছু অংশ বের করা গেলেও সম্পূর্ণ সমাধানের জন্য ছোট কাটার মাধ্যমে গ্লান্ডের অবশিষ্টাংশ বের করতেই হয়। তবে স্তনের গ্রন্থির চারপাশে চর্বির স্তর রেখে দেওয়া হয়, যাতে পুরুষের স্তনের স্বাভাবিক আকার অক্ষুণ্ন থাকে।
এ সমস্যার কারণে যদি ব্যক্তিগত বা সামাজিক কোনো কর্মকাণ্ড ব্যাহত না হয়, তাহলে অপারেশন করানোটা খুব জরুরি নয়। তবে এটি যদি সামাজিক জীবনযাপনে বাধা দেয় কিংবা মানসিক সমস্যা তৈরি করে, সে ক্ষেত্রে অপারেশন করে সম্পূর্ণ সমাধান করাই সমীচীন।