মসলাদার খাবার
মসলাদার খাবার অনেকেই পছন্দ করে। কিন্তু বেশি মসলাদার খাবার খেতে পুষ্টিবিদেরা নিরুৎসাহিত করেন। আর এজন্যই মানুষ মনে করে, মসলাদার খাবারের কারণে মুখে বা পাকস্থলীতে আলসার হয়। মসলাদার খাবার গ্রহণের পর কারও কারও যে পেট বা বুক জ্বলাপোড়া হয় এটি সত্য। কিন্তু মসলাদার খাবার খেলে আলসার সমস্যা হতে পারে এর কি কোনো সত্যতা আছে?
চিকিৎসা বিষয়ক ওয়েবসাইট মেডিকেল নিউজ টুডেতে ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়, মুখের আলসারের সঙ্গে মসলাদার খাবারের কোনো সম্পর্ক নেই। গবেষণাটিতে স্বল্পমেয়াদি মুখের আলসারের কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন মুখে আঘাত, মুখে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, অ্যালার্জি ও কেমোথেরাপি। অনুরূপভাবে দীর্ঘমেয়াদি মুখের আলসারের সঙ্গে মসলাদার খাবারের কোনো সম্পর্ক চিকিৎসকেরা খুঁজে পাননি।
আমেরিকান কলেজ অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির (এসিজি) বরাত দিয়ে ওয়েবসাইটটি জানায়, মসলাদার খাবার পেপটিক আলসার সৃষ্টি করে না। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজেস (এনআইডিডিকে) নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, পেপটিক আলসারের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণ এবং ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগ (এনএসএআইডি) গ্রহণ।
বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসলাদার খাবারের কারণে পাকস্থলীতে ক্যানসার হয়, এটি প্রচলিত ধারণা। ১৯৮০-এর দশকে এসে বিজ্ঞানীরা দেখেন, এ ধারণাটি অবৈজ্ঞানিক। মসলাদার খাবার আলসার সৃষ্টি করে না, তবে আলসারে সমস্যা সৃষ্টি করে। আর এখান থেকেই এ ভুল ধারণার জন্ম।
কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের ওয়েবসাইটে মসলাদার খাবার এবং জীবনযাপনের কারণে পাকস্থলীতে আলসার হয়—এমন বিশ্বাসকে সাধারণ ভুল ধারণা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আলসারের জন্য প্রকৃত অর্থে দায়ী হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া।