
ক্রিস্টি নোয়েম
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি–বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম বলেছেন, ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কৌশল যেন এক হয়—এই বার্তা নিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গতকাল সোমবার ইসরায়েল সফর শেষে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, ‘এসব আলোচনার অগ্রগতি কেমন এবং আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগোনো কতটা গুরুত্বপূর্ণ—সেসব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর (নেতানিয়াহু) সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশেষভাবে আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন।’ তিনি জানান, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর খোলামেলা ও সরাসরি আলোচনা হয়েছে।
এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন মার্কিন ও ইরানি কর্মকর্তারা রোমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পঞ্চম দফার আলোচনা শেষ করেছেন। আলোচনার অগ্রগতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ট্রাম্পও। গত রোববার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমি জানি না, দুই দিনের মধ্যে আপনাদের ভালো, না খারাপ খবর দিতে পারব। তবে আমার মনে হচ্ছে, সেটা ভালো কিছুই হবে।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনার মাঝেও মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে, ইরান হুমকি দিয়েছে—ইসরায়েলের যেকোনো হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তারা অভিযোগ করেছে, নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বানচাল করার চেষ্টা করছেন।
ইসরায়েল বরাবরই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে সন্দেহপ্রবণ। নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, ইরান খুব শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে। তাঁর দাবি, ইরান বিভিন্ন ইসরায়েলবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
ক্রিস্টি নোয়েমের ভাষায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র জানে, নেতানিয়াহু ইরানকে বিশ্বাস করেন না। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য বার্তা হলো, আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট আছেন, যিনি শান্তি চান। কিন্তু সেই সঙ্গে এমন একজন প্রেসিডেন্টও চান, যিনি ভবিষ্যতে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতা কোনোভাবেই সহ্য করবেন না। তারা কোনো পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। প্রেসিডেন্ট তা হতে দেবেন না।’
এ ধরনের কূটনৈতিক সফর ও বার্তা আদান–প্রদান ইঙ্গিত দিচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি যে কোনো সময় বড় ধরনের পরিবর্তনের দিকে মোড় নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি দেখালেও, অন্যদিকে ইসরায়েলকে আশ্বস্ত রাখছে যে, তারা ইরানের পরমাণু হুমকি মোকাবিলায় একসঙ্গে রয়েছে।