
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আবাসনভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাজেট ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের দাবিতে যমুনা অভিমুখে লংমার্চে অংশ নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ দমন-পীড়ন চালিয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে শুরু হওয়া লংমার্চে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে বাধা দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা করে, পরে ছোড়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং চালায় জলকামান। এতে লংমার্চ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে, শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে পড়েন মৎস্য ভবন মোড়ের দিকে।
লংমার্চে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশের হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে শিক্ষকও রয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
তিন দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন
এই লংমার্চের আয়োজক 'জুলাই ঐক্য' নামের একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন একত্রিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইউজিসিতে সাক্ষাৎ করতে গেলে কোনো আশাব্যঞ্জক প্রতিক্রিয়া না পেয়ে আজকের লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আন্দোলনকারীদের তিনটি প্রধান দাবি হলো:
১. আবাসনভাতা: বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন ভাতা কার্যকর করতে হবে।
২. পূর্ণাঙ্গ বাজেট: বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো ধরনের কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন করতে হবে।
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিরোধী সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণ
এই লংমার্চে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ছাড়াও ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রশিবির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
তাঁরা জানিয়েছেন, এ ধরনের দমন-পীড়ন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি থেকে সরাতে পারবে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে আলোচনায় বসা, না হলে আন্দোলনের গতি আরও তীব্র হবে।