ইসলামের দৃষ্টিতে অভিশাপ দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মুসলিম ও অমুসলিম কাউকে অভিশাপ দেওয়া যাবে না। কোনো মুসলমানকে অভিশাপ দেওয়া হারাম। মুমিন মুসলমান অভিশাপ দিলে অনেক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এই অভিশাপ নিজের ওপরও পড়ে তা হাদিসের বর্ণনায় সুস্পষ্ট।
নবি মুহম্মদ (সা.) একাধিক হাদিসে অভিশাপ বিষয়ে এভাবে তুলে ধরেছেন-
১. হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘অভিশম্পাতকারীরা (কেয়ামতের দিন) সুপারিশকারী হতে পারবে না এবং সাক্ষীদাতাও হতে পারবে না।’ (আবু দাউদ ৪৯০৭, আদাবুল মুফরাদ)
২. হজরত ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি বাতাসকে অভিশাপ দিলো। মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক ব্যক্তির (গায়ে দেওয়া) চাদর বাতাসে ওলটপালট হয়ে গেলে (ফলে) সে বাতাসকে অভিশাপ দিলো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি বাতাসকে লানত করো না, কেননা সে নির্দেশপ্রাপ্ত। যা অভিশাপযোগ্য নয় কেউ তাকে অভিশাপ দিলে তা অভিশাপকারীর উপরই পতিত হয়।’ (আবু দাউদ ৪৯০৮, তিরমিজি)
৩. হজরত সামুরাহ ইবনু জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর অভিশাপ, আল্লাহর গজব বা জাহান্নাম দ্বারা অভিশাপ দিও না।’ (আবু দাউদ ৪৯০৬, তিরমিজি, আদাবুল মুফরাদ)
অভিশাপ দেওয়া কোনো মুমিন ব্যক্তির জন্য শোভা পায় না। অভিশাপে মানুষ কষ্ট পায়। কারো মনে কষ্ট না দেওয়া ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলমান। হাদিসে বলা হয়েছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (তিরমিজি ২৬২৭; আবু দাউদ ২৪৮১)
যাকে অভিশাপ দেওয়া হয় সে যদি অভিশাপের উপযুক্ত না হয়, তাহলে এই অভিশাপ তার দিকে যায় না। বরং অভিশাপকারীর দিকেই ফিরে আসে। মুসলমানদেরকে এ জন্য অভিশাপ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।