
সাইফ ও অমৃতা
দুইজনের বয়সের পার্থক্য, অন্য দিকে কেরিয়ারে আয়ের পার্থক্য। তবুও সব বাধা পেরিয়ে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন সেই সময়কার সুপারস্টার অমৃতা সিংহ ও সইফ আলি খান।
নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় সইফ এবং অমৃতা বিয়ে করেন। কিন্তু তাদের বিবাহিত জীবনে সুখ ছিল না। পরকীয়াসহ আরও কিছু অভিযোগে মাত্র ১৩ বছরের মাথায় বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তারা। তাদের সেই প্রেমকাহিনি সিনেমার চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না।
আশির দশকে কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে অভিনয় করেই ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নেন অমৃতা। ১৯৮৩ সালে ‘বেতাব’ ছবিতে সানি দেওলের সঙ্গে অভিনয় করতে দৃষ্টি কাড়েন অমৃতা। জনপ্রিয় লেখক খুশবন্ত সিংহের পরিবারের কন্যা অমৃতা। শুরু থেকেই একের পর এক হিট ছবিতে পর পর কাজ করে যান অমৃতা। যখন তিনি কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত, সেই সময় ব্রিটেনে পড়াশোনা করতে যান সাইফ। তখনো অভিনয়ের প্রতি তার তেমন জোক ছিল না।
তবে ব্রিটেনে পড়াশোনা শেষ করে বিজ্ঞাপনের কাজে অংশ নিতে মুম্বাই যান সাইফ। কোনও কারণে শুটিং না হলেও সাইফ স্থির করে ফেলেন যে তিনি অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়বেন। এরপর রাহুল রাওয়াইল পরিচালিত ‘বেখুদি’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান সাইফ। সেখানে কাজলের বিপরীতে অভিনয় করেন। কয়েকটি দৃশ্যের শুটিংও শেষ করার পর সাইফের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় অমৃতার।
অমৃতাকে প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যান সইফ। কীভাবে অমৃতার সঙ্গে আবার দেখা করা যাবে তার উপায় খুঁজতে শুরু করেন নবাবপুত্র। শেষমেশ অমৃতার বাড়ির ফোন নম্বর জোগাড় করে দেরি না করে অমৃতাকে ফোনও করে দেন সাইফ। নৈশভোজের জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তাব দেন সাইফ। কিন্তু নায়িকা জানান, আমি বাড়ির বাইরে কোথাও নৈশভোজ করি না। তুমি চাইলে আমার বাড়ি আসতে পারো।
এরপর সাইফ সোজা চলে আসেন নায়িকার বাড়ি। পুরনো সাক্ষাৎকারে অমৃতা জানিয়েছিলেন, ডেট করতে গিয়ে সাইফ নাকি টানা দু’দিন অমৃতার বাড়িতেই ছিলেন। দু’জনের কেউ নাকি চার দেওয়ালের বাইরে যাননি।
কিন্তু কি আর করা, দু’দিন পর শুটিংয়ের কাজে অমৃতার বাড়ি থেকে খানিকটা বাধ্য হয়ে বার হন সাইফ। দুই তারকা একে অপরকে ছাড়া আর এক মুহূর্তও থাকতে পারছিলেন না। কেরিয়ার শুরুর আগেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সাইফ।
১৯৯১ সালে অমৃতা যখন তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা। তখন সাইফকে বিয়ে করেন । কিন্তু সাইফ অভিনেতা হিসাবে সফল হতে পারেননি তখনও। সইফের প্রথম ছবি মুক্তির দু’বছর পর ১৯৯৫ সালে সাইফ এবং অমৃতার কন্যা সারা আলি খানের জন্ম হয়।
কেরিয়ারের সঙ্গে সঙ্গে সাইফের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে অনেকের নাম জড়িয়ে পড়ে বলিপাড়ায়। অনু আগরওয়াল এবং মুনমুন সেনের মতো বড় মাপের তারকাদের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সাইফ এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে।
সাইফ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তার উপার্জন কম হওয়ার কারণে দিনের পর দিন তাকে কড়া কথা শোনাতেন অমৃতা। আর তাতে ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক বিষিয়ে যেতে থাকে। ২০০১ সালে ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবিতে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সাইফ। একই বছর সাইফ এবং অমৃতার পুত্রসন্তান ইব্রাহিম আলি খানের জন্ম হয়।
তার পর ‘কাল হো না হো’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান সাইফ। সাইফ এই ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ও করেছিলেন। তার পর আর কেরিয়ারে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সাইফকে। একের পর এক ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান তিনি।
কিন্তু অমৃতার সঙ্গে সাইফের ১৩ বছরের বিবাহিত জীবন সম্পূর্ণ শেষ হয়ে ২০০৪ সালে। বিচ্ছেদের পর মডেল রোসা ক্যাটালানোর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সাইফ।
তবে রোসার সঙ্গেও সম্পর্কে বেশি দিন টেকেনি সাইফের। এর পর ১০ বছর বয়সে ছোট করিনা কপূরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সাইফ। ২০১২ সালে করিনার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেতা।
সইফের দাবি, সম্পর্কে থাকাকালীন রোজ তাঁর উপার্জন নিয়ে অমৃতার কটাক্ষের শিকার হতেন। এমনকি, বিচ্ছেদের পর নাকি সারা এবং ইব্রাহিমের সঙ্গে সইফকে দেখাও করতে দিতেন না অমৃতা। এক সাক্ষাতকারে সাইফের দাবি করেন, সম্পর্কে থাকাকালীন প্রতিদিন উপার্জন নিয়ে অমৃতার কটাক্ষের শিকার হতেন। এমনকি, বিচ্ছেদের পর নাকি সারা এবং ইব্রাহিমের সঙ্গে সাইফকে দেখাও করতে দিতেন না অমৃতা।