
খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় সংঘর্ষ ও গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবিব পলাশ ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নিহতদের লাশ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তবে কার গুলিতে কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। একই ঘটনায় আরও অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।
নিহত ও আহত
-
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ সাবের জানিয়েছেন, গুইমারা থেকে আনা তিনজন পুরুষের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
-
আহত চারজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
-
সোমবার সকালে নিহতদের ময়নাতদন্ত হবে।
ঘটনার পটভূমি
গত মঙ্গলবার রাতে পাহাড়ি এক কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে শনিবার ভোর থেকে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। এর ফলে চট্টগ্রাম–খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি–রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি–সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রোববার দুপুরে গুইমারার রামেসু বাজারে আগুন দেওয়া হয়। এতে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান, বসতবাড়ি এবং মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। দোকানপাট ও বাড়িঘরের মালিকদের বেশির ভাগ পাহাড়ি।
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে গুলি ছোড়া হয়। গুলির পরপরই আতঙ্কে লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে ২০–২৫ জন মুখোশধারী বাজারে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রশাসনের বক্তব্য
-
খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও সংঘাত হয়েছে।
-
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, ১৪৪ ধারা জারির পরও এ ধরনের ঘটনা হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। স্থানীয় প্রশাসন ও নেতৃত্বের অপরিণত আচরণের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি
-
গুইমারা ও খাগড়াছড়ি শহরে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
-
সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
-
শহরের বাজারগুলো বন্ধ রয়েছে, প্রয়োজনীয় কাজে বের হওয়া মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঘটনার প্রতি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।
-
নিহত তিনজন পাহাড়ি ছাড়াও এক মেজরসহ সেনাসদস্য, পুলিশ ও আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়।
-
ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
-
সবাইকে ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।