
আবদুল হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে ‘ভুয়া ধর্ষণ’ হিসেবে মন্তব্য করে বিতর্ক ছড়িয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি এ মন্তব্যের জন্য বিব্রত ও দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ ও সময়রেখা সংক্ষেপে —
-
হান্নান মাসউদ একটি সমাবেশে খাগড়াছড়ি সংক্রান্ত মন্তব্যে ‘ভুয়া ধর্ষণ’ কথাটি ব্যবহার করেন; ওই মন্তব্যটির পরই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
-
সমালোচনার প্রেক্ষিতে তিনি আংশিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেন — পরে ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দটি ব্যবহারে তিনি ‘বিব্রত ও দুঃখিত’। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ‘ধর্ষণের মতো গর্হিত অপরাধকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না’ এবং ধর্ষকের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে দাঁড়ান।
-
প্রথম পোস্টটি কিছুক্ষণ পর তিনি মুছে দেন এবং পরে অন্য একটি পোস্টে ব্যাপকভাবে ক্ষমা চেয়ে ও বক্তব্য পরিষ্কার করে পুনরায় লিখেন। সেখানে তিনি বলেন, তাঁর বক্তব্যের উদ্দেশ্য ধর্ষণকে অনস্বীকার করা ছিল না এবং তিনি আশা করেন মানুষ এটিকে তাঁর ‘মুহূর্তের ভুল’ হিসেবে গ্রহণ করবেন।
পদত্যাগ ও রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি —
-
একই ঘটনার প্রেক্ষিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একমাত্র প্রতিনিধি অলিক মৃ আজ সোমবার সকালে পদত্যাগ করেন। তিনি পদত্যাগের কারণ হিসেবে হান্নান মাসউদের ‘ভুয়া ধর্ষণ’ শব্দচয়নকে মিথ্যাচার হিসেবেও উল্লেখ করেছেন এবং দলের নীরবতা নিয়েও অভিযোগ তোলেন।
-
পদত্যাগের কয়েকক্ষণ পর হান্নান মাসউদ তার বক্তব্যের স্বপক্ষে আবারো ফেসবুকে পোস্ট করেন; সেখানে তিনি দাবি করেন, ‘একটি ধর্ষণের ঘটনাকে সামনে এনে পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে’ এবং দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তিনি কঠোর অবস্থান নিন। পরে তিনি সেই পোস্টটি মুছে ফেলে ক্ষমা চাওয়া পোস্ট দেন।
বক্তব্য ও আবেদন —
হান্নান মাসউদ পরে অনুরোধ করেন— পাহাড় ও সমতলের সকল বাংলাদেশিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘পরাজিত ও ফ্যাসিবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করুন’ এবং উভয় পক্ষের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা तथा আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের প্রতি শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানান।
প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল —
এই ঘটনার ফলে রাজনৈতিকভাবে চাপ তৈরি হয়েছে; এনসিপির অভ্যন্তরীণ বৈরী প্রতিক্রিয়া এবং অলিক মৃ’র পদত্যাগ বিষয়টি তুলে এনেছে দলটির মধ্যে বিরোধিতার ইঙ্গিত। সামাজিক মাধ্যমে জনমত বিভক্ত এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধী শিবিরে মন্তব্যটির ব্যাপক প্রত্যুত্তর দেখা গেছে।