ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২৩ অক্টোবর ২০২৫

Advertisement
Advertisement

যেসব কারণে চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়ছে নতুনরা, রইলো পরামর্শ

প্রকাশিত: ১৬:১৮, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৬:২১, ২২ অক্টোবর ২০২৫

যেসব কারণে চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়ছে নতুনরা, রইলো পরামর্শ

চাকরির বাজার

দকরোনা–পরবর্তী এআইয়ের যুগে বদলে গেছে চাকরির বাজারের নিয়মকানুন। এখন শুধু সার্টিফিকেটই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন এর থেকেও বেশি কিছু। যে কারণে চাকরি জোটানোও হয়ে পড়েছে কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে সদ্য পাস করে বের হওয়া অনেকেই ভালো ফলাফল, স্মার্ট, প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়েও সুবিধা করতে পারছেন না। একের পর এক সিভি পাঠিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিন্তু কেন? উপায়ই–বা কী? 

এআইয়ের আবির্ভাব

সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনো কারও জন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করা অসম্ভব। কেউ চাকরি না দিলে অভিজ্ঞ হওয়ার সুযোগ মিলবে কীভাবে? আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট থাকলেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের চাকরি মিলত সহজে। ডেটা এন্ট্রির মতো কাজ করার জন্য ফ্রেশারদের প্রাধান্য দেওয়া হতো। কিন্তু এখন সেই কাজ এআই করে দিচ্ছে বাড়তি কোনো খরচ ছাড়াই। যার প্রভাব পড়ছে নতুন চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য।

নির্দিষ্ট দক্ষতার ঘাটতি

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই এখন নির্দিষ্ট কাজের ওপর ভিত্তি করে কর্মী নিয়োগ দেয়। এখন কম্পিউটার জানা থাকলেই চাকরির বাজারে সুবিধা করা যায় না। বরং যে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো লোক খুঁজছে, সেসব বিষয়ে দক্ষ হতে হয়। সামাজিক মাধ্যমের ম্যানেজার অথবা এসইও—নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর লোক খোঁজে প্রতিষ্ঠানগুলো, যা সবার থাকে না।

যোগাযোগের ঘাটতি

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু ডিজিটাল হয়ে যাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়েছে যোগাযোগে। বড় একটা সময় অনলাইনে থাকার কারণে সরাসরি কথোপকথন কিংবা কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়, সেই অভিজ্ঞতার অভাব থেকেই যায়।

দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান ফারাহ্ তানজীন বলেন, ‘আমরা ইন্টারভিউয়ে ফ্রেশারদের দক্ষতাগুলো দেখার চেষ্টা করি। বিশেষ করে যোগাযোগে কতটা ভালো—সে ব্যাপারে আমরা নজর দিই। যোগ্যতা অনুযায়ী মানানসই হলেই তাকে নিয়ে সামনে এগোনোর কথা ভাবি।’

সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় পার করে যাঁরা চাকরিতে ঢুকছেন, তাঁদের বেশির ভাগই চাকরিকে চাকরি হিসেবেই দেখেন। সময়ের বাইরে আলাদা কিছু করতে চান না। এতে অনেক চাকরিদাতাই নাখোশ হন। এখানে দুই পক্ষেরই মানিয়ে চলার ব্যাপার আছে বলে মনে করেন ফারাহ্ তানজীন। তিনি বলেন, ‘অফিসের প্রয়োজনে যেমন সময়ের বাইরে কাজ করতে হয়, তেমনই অফিসের বাইরে কর্মীর খোঁজখবরও রাখতে হয়। দুই পক্ষ মিলেমিশে কাজ করতে পারলেই ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স করে চলা যায়, প্রতিষ্ঠানও খুশি থাকে।’

উপায় কী

সব অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিন

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে থাকতেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় শুরু করুন। ফ্রিল্যান্সিং বা ব্যক্তিগত প্রজেক্ট, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা—যে কাজ পাবেন, সেটাই করুন। যাতে সিভি অথবা পোর্টফোলিও দেখে কেউ ‘অভিজ্ঞতা নেই’ বলতে না পারে। ‘করপোরেট কোচ’–এর প্রধান নির্বাহী যিশু তরফদার বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো কিছু কাজ করলে তাঁর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে ও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা অনেক কিছু শিখতে সহায়তা করবে।’

এআইকে বন্ধু বানান

এআইয়ের রাজত্ব এখন। দিন যত গড়াবে এআই আরও বেশি প্রভাব বিস্তার করবে। ফলে আপনার কাজের জন্য কোন কোন প্রযুক্তি দরকার, কীভাবে তা কাজে লাগাতে পারেন, সেই চিন্তা এখন থেকেই শুরু করুন। 

সফট স্কিল তৈরি করুন

পৃথিবী যতই ডিজিটাল হোক না কেন, সফট স্কিলের মূল্য সব সময়ই থাকবে। সফট স্কিল হলো সেই দক্ষতা, যা আপনাকে অন্যদের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে, সম্পর্ক গড়তে, দলকে নেতৃত্ব দিতে এবং পেশাগতভাবে সফল হতে সাহায্য করে। কারও সামনে নিজেকে ও নিজের কাজ তুলে ধরা, গুরুত্বপূর্ণ ও চাপের সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন, সে বিষয়ে যদি চাকরি না-ও হয়, তবুও চাকরিক্ষেত্রে নিজেকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। বাকিদের তুলনায় আপনি হয়ে থাকবেন আলাদা।

সিভি টেইলারিং

প্রতিটি চাকরির জন্য একই ধরনের সিভি পাঠাবেন না। বরং চাকরিভেদে নিজের আলাদা আলাদা সিভি তৈরি করুন। যে কাজে যেটির প্রাধান্য বেশি, সেটি মাথায় রেখে সিভি তৈরি করুন। এতে আপনাকে আলাদা করা সহজ হবে। চাকরির ক্ষেত্রেও পাবেন সফলতা।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531