ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২৩ অক্টোবর ২০২৫

Advertisement
Advertisement

ছাত্র প্রতিনিধি দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ২১:০০, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ছাত্র প্রতিনিধি দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল

মাহফুজ

অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আরও সময় নিতে চেয়েছেন। এই দুই উপদেষ্টা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মাহফুজ আলম এখন পর্যন্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তিনি সরকারে থাকতে চান। আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করতে পারেন। তবে কোনো বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে দুই উপদেষ্টার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে আসিফ মাহমুদ গত ১৪ আগস্ট সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি পদত্যাগ করবেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম গত ২৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দুই মাস ধরে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি যে আমি কখন নেমে যাই। মানে আমি কখন নামব, আমি জানি না।’

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রধান উপদেষ্টাসহ ২৩ জন। তাঁদের মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি।

সূত্র বলছে, ছাত্র প্রতিনিধিদের কেউ না কেউ উপদেষ্টা পরিষদে শেষ পর্যন্ত থাকুক, এটা চান ছাত্র উপদেষ্টারা। তাঁরা মনে করছেন, না থাকলে উপদেষ্টা পরিষদে কেউ কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রধান উপদেষ্টাসহ ২৩ জন। তাঁদের মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি।

সরকার গঠনের সময় উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধি মো. নাহিদ ইসলাম। পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক হন। এনসিপি গঠন করেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা।

মাহফুজ আলম শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ছিলেন। নিয়োগ পান গত বছরের ২৮ আগস্ট। পরে ১০ নভেম্বর তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। তবে সে সময় তাঁকে কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করার পর তাঁকে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ শুরুতে ছিলেন শ্রম মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এ এফ হাসান আরিফকে (প্রয়াত) সরিয়ে আসিফ মাহমুদকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় গত বছরের নভেম্বরে। এখন তিনি স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এমন ধারণা করতে অসুবিধা হয় না যে এই দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা এনসিপির ঘনিষ্ঠ। তাঁরা দলটির পরামর্শকের ভূমিকায় থাকেন। সর্বশেষ জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করা নিয়ে সংকটের মধ্যে ১৪ অক্টোবর রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এনসিপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে। বৈঠকে দলটির পক্ষে অন্য নেতাদের পাশাপাশি অংশ নেন একজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাও।

অবশ্য এনসিপি নেতাদের মত হলো, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় বিভিন্ন দলের কাছ থেকে নাম নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে শুধু দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরকার থেকে সরে যেতে বলা তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

অবশ্য এনসিপি নেতাদের মত হলো, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় বিভিন্ন দলের কাছ থেকে নাম নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে শুধু দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরকার থেকে সরে যেতে বলা তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়টি গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি নেতারা তুলেছেন বলে জানিয়েছে একটি দায়িত্বশীল সূত্র।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করা হতে পারে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য রাজনীতিতে আলোচনা তৈরি করেছে। বিএনপি উপদেষ্টা পরিষদ থেকে দলীয় লোকদের অপসারণ চেয়েছে।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের কোনো কোনো উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলেছেন।

বিষয়টি নিয়ে লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে যেসব বক্তব্য আসছে, তা সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। এসব বক্তব্য জনগণের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করতে পারে। তাই এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, দুই ছাত্র উপদেষ্টার উচিত পদত্যাগ করা অথবা ঘোষণা দেওয়া যে তাঁরা নির্বাচন করবেন না এবং এনসিপির সঙ্গে তাঁদের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কোনো সম্পর্ক নেই।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531