
কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ায় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের এক সপ্তাহ আগে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মে মাসের পর এই প্রথম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো পিয়ংইয়ং। এই ঘটনা ওয়াশিংটন ও সিউলের মধ্যে চলমান আলোচনা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন দক্ষিণ কোরিয়া সফর ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) ফোরামের শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট লি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাতের কথা রয়েছে। ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বুধবার ভোরের দিকে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছাকাছি এলাকা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে ছোড়া বেশ কয়েকটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের অস্তিত্ব তারা শনাক্ত করেছে।
ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (২১৭ মাইল) পথ পাড়ি দিয়েছে। সামরিক কর্মকর্তাদের ধারণা, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দেশের অভ্যন্তরেই পড়েছে।
জানা যায়, দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে ট্রাম্প এবং লি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে পিয়ংইয়ং এই বিষয়ে জনসমক্ষে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আলোচনায় জড়িত এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা দুই কোরিয়ার বিভাজনকারী ডিমিলিটারাইজড জোন (ডিএমজেড) পরিদর্শনের কথা বিবেচনা করেছিলেন, তবে তা কখনও নিশ্চিত করা হয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়া ইতিমধ্যে আন্তঃকোরীয় সীমান্ত গ্রাম পানমুনজম-এর জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়া (জেএসএ)-তে নভেম্বর মাসের শুরু পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণ স্থগিত করেছে। তবে কিমের সঙ্গে কোনও বৈঠকের পরিকল্পনা নিশ্চিত করেনি।
ট্রাম্পের ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের প্রথম মেয়াদে তিনি এবং কিম তিনবার শীর্ষ সম্মেলন করেছিলেন এবং বেশ কয়েকটি চিঠিও আদান-প্রদান করেন। কিন্তু কিমের পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়ার মার্কিন দাবির কারণে সেই অভূতপূর্ব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ভেঙে যায়।
পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়া গত এক দশক ধরে জাতিসংঘের একাধিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার ক্রমাগত উন্নতি ঘটিয়েছে। তারা দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে, যা সঠিক গতিপথে উৎক্ষেপণ করা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের আগেই তারা গতিবিধি শনাক্ত করেছিল এবং উৎক্ষেপণের পর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর গতিপথ পর্যবেক্ষণ করেছে।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া সর্বশেষ গত ৮ মে তাদের পূর্ব উপকূল থেকে একাধিক স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছিল। চলতি মাসের শুরুতে এক সামরিক কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়া তাদের সর্বশেষ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে, যেখানে চীনের প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।