আনসার
বাড়তি নিরাপত্তার দরকার হলে এখন থেকে বিদেশি দূতাবাস, সংস্থা ও কূটনৈতিক মিশনগুলো নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে আনসার বাহিনীর অতিরিক্ত নিরাপত্তা (এসকর্ট) নিতে পারবে। এ-সংক্রান্ত একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করে দূতাবাসগুলোকে জানিয়েছে দিয়েছে সরকার। এজন্য প্রশিক্ষিত একজন আনসার সদস্যের জন্য দিতে হবে মাসে ৩০০ মার্কিন ডলার বা ৩২ হাজার টাকা। আর দূতাবাসগুলো প্রয়োজন মনে করলে আনসার ব্যাটালিয়ন থেকে গাড়িও ভাড়া নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে একটি গাড়ির জন্য প্রতি মাসে ১ হাজার ডলার বা ১ লাখ ৭ হাজার টাকা দিতে হবে। শর্ত হলো, গাড়ির জ্বালানি খরচ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা সংস্থাকে।
গত ১৮ মে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়েছে। একই সঙ্গে কূটনৈতিক পত্রে দূতাবাসগুলোকে অতিরিক্ত নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরিচালকের (অপারেশনস) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পত্রে আরও বলা হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্কসংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬১ এবং ভিয়েনা কনভেনশন অন কনস্যুলার রিলেশনস ১৯৬৩ অনুযায়ী, কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার মিশনগুলো এবং তাদের প্রতিনিধিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার যথাযথভাবে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে চলছে।
গত ১৫ মে আকস্মিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারত—এই চার দেশের রাষ্ট্রদূতদের দেওয়া বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। পরে বিষয়টি নিয়ে একাধিক দূতাবাস হতাশা প্রকাশ করে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জানিয়েছে।
পরে ১৬ মে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বলেছে, কয়েক বছর আগের একটি ঘটনায় কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে ট্রাফিক মুভমেন্টে (রাস্তায় চলাচল) সহায়তার জন্য বাড়তি কিছু লোকবল দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং নিয়ন্ত্রণে আছে। তাই বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার আবশ্যকতা নেই। পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর কার্যপরিধি বৃদ্ধির জন্য এই বাড়তি সুবিধা অব্যাহত রাখা যাচ্ছে না।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন কে বলেন, রাষ্ট্রদূতদের মুভমেন্টের (রাস্তায় চলাচল) জন্য যদি নিরাপত্তা দিতে হয়, তাহলে পুলিশের মাধ্যমেই কাজটি করা উচিত। কারণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পুলিশ যুক্ত, আনসার নয়। আবার যানজটের বিষয়ে আনসারের প্রশিক্ষণ নেই।