
আবরার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এই রায় দেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আবরার ফাহাদের ছোট ভাই, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ, আদালতের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, "যত দ্রুত সম্ভব রায় বাস্তবায়ন করে এটিকে দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থাপন করা হোক।" তবে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমির কারাগার থেকে পালানোর ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, "৫ আগস্টের পর অনেকে পালিয়েছে। কিন্তু যিনি আবরারকে ডেকে নিয়েছিলেন, তাঁর পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ছয় মাস পরে কেন জানানো হলো, সেটি আমাদের বোধগম্য নয়।"
আবরার ফাইয়াজ আরও বলেন, "হাইকোর্ট থেকে এত বড় একটি রায় আসবে, এক বছর আগে এমনটা কল্পনা করিনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।"
ছাত্ররাজনীতি ও র্যাগিংমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের আহ্বান
আবরার ফাইয়াজ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির প্রসঙ্গে বলেন, "ছাত্রসংগঠনগুলো এ বিষয়ে কথা বলতে পারে, তবে আমরা চাই, যে পরিণতি আবরারের হয়েছে, সেটা যেন আর কারও বরণ করতে না হয়।" এ জন্য সরকার ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আবরার ফাহাদের বাবা বরকতউল্লাহ বলেন, "আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ভবিষ্যতে যেন আর কোনো আবরারকে জীবন দিতে না হয়, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে র্যাগিংমুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যাতে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়াশোনা করতে পারেন।"
দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি আবরারের মায়ের
কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, "আমার মতো আর কোনো মায়ের যেন সন্তান হারাতে না হয়। আর কোনো ছেলেকে যেন অল্প বয়সে নির্মমভাবে জীবন দিতে না হয়।" তিনি দ্রুততম সময়ে রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে বলেন, "এটি বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে কেউ এমন জঘন্য কাজ করতে সাহস পাবে না।"
আবরার ফাহাদকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান তাঁর বাবা বরকতউল্লাহ।
এই রায় বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেবে বলে মনে করছেন অনেকে। এখন দেখার বিষয়, এটি কত দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।