
দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে
প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বসানো হয়েছে মেডিকেল টিম, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি’ পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা আসার পর আজ মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে কাজ শুরু করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টিম। একই সঙ্গে মাস্ক পরিধান ছাড়া ইমিগ্রেশন এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ভারতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। মে মাসের দিকে এটি দ্বিগুণ হয়। এমনকি চলতি মাসে ঢাকায় ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
যাত্রীরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। জয়পুরহাট থেকে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া এক যাত্রী মাস্ক ব্যবহারের এই উদ্যোগকে 'অনেক ভালো কাজ' বলে মন্তব্য করে বলেন, "শুধু করোনার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এমনটা ঠিক নয়, আমার মতে সব সময় এটি ব্যবহার করা উচিত।"
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে মমিন হোসেন নামে এক শ্রমিক বলেন, "ভারতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এখানে মাস্ক ব্যবহার ছাড়া যাত্রীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এতে যাত্রীদেরও কোনো আপত্তি নেই। বিষয়টিকে সবাই সাধুবাদ জানিয়েছে।"
ভারতের চেন্নাই থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাংলাদেশে আসা গাইবান্ধার রফিকুল ইসলাম বলেন, "আমি ভারতের প্রায় ১০ দিন মতো ছিলাম। সেখানে প্রতিটি স্থানেই মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে এসে এখানকার (ইমিগ্রেশন) চিকিৎসকরা আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন, অনেক পরামর্শ দিয়েছে, এটা খুব একটা ভালো উদ্যোগ।"
ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের বাড়তি সতর্কতার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আবু তালেব বলেন, "ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে করোনা মোকাবেলার জন্য যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বুথ বসানো হয়েছে। সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন প্রতিনিধি আছেন। তিনি যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।" তিনি আরও বলেন, "ভারত থেকে আগত যাত্রীদের মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য সচেতন বিষয়ে ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।"
করোনার নতুন সংক্রমণের উপসর্গগুলোর বিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) হুমায়ুন কবির বলেন, "আমরা মানুষকে বিভিন্নভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছি। মানুষের কাছ থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে বলছি। করোনার প্রথম উপসর্গ হলো হালকা জ্বর হওয়া, কাঁশি, গলা ব্যথা, খাবারে অরুচি থাকতে পারে। এছাড়াও অনেক সময় রোগীর নাকের গন্ধ চলে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলোয় আমরা সচেতন করছি।"