
আসিফ মাহমুদ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, "গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি আন্দোলন করছে।"
আজ সোমবার (১৯ মে) বিকেলে নিজের ফেসবুক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে, যার ফলে সিটি করপোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং নাগরিক ভোগান্তি বাড়ছে।
ষষ্ঠ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা আজ ষষ্ঠ দিনের মতো নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা নগর ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের হস্তক্ষেপের কারণেই আদালতের রায় ও গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না।
শপথ না হওয়ার ১০টি কারণ উল্লেখ
পোস্টে আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ বিলম্বিত হওয়ার পেছনে ১০টি জটিলতা রয়েছে। সেগুলো হল:
-
হাইকোর্টের রায় উপেক্ষা করে ট্রাইব্যুনালের রায় প্রদান।
-
একতরফা শুনানিতে রায় এবং আপিল না করার ব্যর্থতা।
-
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই গেজেট প্রকাশ এবং লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা।
-
স্থানীয় সরকার বিভাগ মামলায় পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে তাদের নির্দেশনা নেই।
-
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রিট এখনো বিচারাধীন।
-
ট্রাইব্যুনালের দ্বিমুখী অবস্থান—বরিশাল মামলায় বিপরীত রায়।
-
মেয়াদকাল সংক্রান্ত অস্পষ্টতা।
-
ইসি’র চিঠিতে “আইনি জটিলতা না থাকলে ব্যবস্থা” নেওয়ার শর্ত।
-
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত এখনো প্রাপ্ত হয়নি।
-
আওয়ামী আমলের নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নে রাজনৈতিক সমঝোতার অভাব।
ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগ
পোস্টের সঙ্গে যুক্ত একটি ছবির প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ বলেন, "ইশরাক হোসেনের এই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কার্যক্রমের কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাইনি।" তিনি আরও দাবি করেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় নেতাকর্মীরাই এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট করে বলেন, বিচারাধীন মামলাগুলোর নিষ্পত্তি এবং আইনি জটিলতা নিরসনের আগে ইশরাক হোসেনের শপথ সম্ভব নয়। প্রক্রিয়াগত বাধাগুলো দূর হলে, স্থানীয় সরকার বিভাগ শপথ নিতে কোনো বাধা দেখবে না বলেও তিনি জানান।
এই পরিস্থিতিতে, নগর ভবনের তালাবদ্ধ অবস্থান এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে বলেও মনে করেন তিনি।