
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
ঢাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যৌথ বাহিনীর সদস্য সেজে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ৭০ ভরি সোনা লুটের ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এদের মধ্যে তিনজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন সরকার, কনস্টেবল মিজানুর রহমান ও আবু বকর। এ ছাড়া অভিযানে ব্যবহৃত কালো মাইক্রোবাসের চালক আবদুস সালামকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ইরফান খান জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে কনস্টেবল মিজানুর ও চালক আবদুস সালামকে শনাক্ত করা হয়। পরে মিজানুর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন এবং মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে এসআই রিপনের নাম প্রকাশ করেন।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বংশালে আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে খালা ও খালাতো বোনকে নিয়ে ঢাকায় আসেন। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেট কারে করে যাওয়ার পথে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল পার হওয়ার পর পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি কালো মাইক্রোবাস এসে তাঁদের গাড়ি থামায়। নিজেকে যৌথ বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে চার ব্যক্তি তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তুলে নেয়। গাড়ির ভেতরে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে লুটে নেয়া হয় সোনার অলংকারসহ অন্যান্য সামগ্রী। পরে তাঁদের ৩০০ ফিট এলাকায় ফেলে দিয়ে যায়।
ভয়ে প্রথমে মামলা না করলেও পরে সাহস সঞ্চয় করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাইফুল ইসলাম থানায় মামলা করেন। মামলার পরদিন চালক আবদুস সালাম ও পরে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্তে উঠে আসে চার পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার বিষয়টি। এর মধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার হলেও কনস্টেবল হানিফ এখনও পলাতক।
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, সঠিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।