
জুবায়েদ হত্যা
ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এটা ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী, এটাকে রাজনৈতিক কোনো কালার দেওয়ার সুযোগ নেই। রাজনীতির বিষয়ে আমরা তেমন কিছু পাইনি। তারা ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে হত্যা করার পরিকল্পনা শুরু করে এবং ১৯ অক্টোবর জোবায়েদকে হত্যা করে৷
তিনি আরও বলেন, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বংশাল থানার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নুর বক্স লেনের রৌশান ভিলার সিঁড়িঘরে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাহির রহমান ও ওই ছাত্রীর মধ্যে নয় বছরের পরিচয় ছিল। তবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয় দেড়-দুই বছরে।
জোবায়েদ প্রায় এক বছর ধরে মেয়েটিকে প্রাইভেট পড়াতেন এবং পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটি দুইজনের সঙ্গেই সম্পর্ক রেখে চলছিল। এ বিষয়টি জানতে পেরে মাহির ক্ষুব্ধ হন এবং মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে মেয়েটি মাহিরকে জোবায়েদকে হত্যার জন্য প্ররোচিত করেন। এই সময় মেয়েটি বলে যদি জোবায়েদকে না সরাতে পারো তাহলে তোমার হতে পারবো না। তারা দুজন একাধিকবার হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং মাহির তার বন্ধু আয়লানকে সঙ্গে নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বউবাজার এলাকা থেকে ৫০০ টাকায় একটি সুইচ গিয়ার ছুরি ক্রয় করেন।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যার দিন বিকেলে টিউশনির সময় জোবায়েদ রৌশান ভিলায় পৌঁছালে মাহির ও আয়লান সিঁড়ির নিচে ওত পেতে থাকেন। সেখানে মাহির জোবায়েদকে সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তখন মাহির ব্যাগ থেকে সুইচ গিয়ার ছুরি বের করে জোবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হত্যার সময় মেয়েটি ভবনের তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ওই ছাত্রীসহ মাহির রহমান (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে (২০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্ত ওই ছাত্রী ও মাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন তারা। তিনি বলেন, জোবায়েদ হোসেনকে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন ওই ছাত্রী ও মাহির রহমান। এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয় এক মাস আগে।
এদিকে, জুবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানায় এ মামলা দায়ের করে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০) ও অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ৪ থেকে ৫ জন।