প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিরা যদি কোটা না পায় তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধের কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?
রোববার বিকেল ৪টায় গণভবনে চীন সফর নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রশ্ন রেখে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।
সরকার প্রধান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? তারা দেশ স্বাধীন করার জন্য জীবনপণ লড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় কীভাবে? মুক্তিযুদ্ধ তাদের এখন ভালো লাগে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা নিয়ে এর আগে আন্দোলনের একপর্যায়ে ২০১৮ সালে সরকার ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে সব ধরনের কোটা বাতিল করেছিল। সেই প্রেক্ষাপট তুলে ধরে পরবর্তী অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটা বাদ দিলে কী অবস্থা হয়। ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুজন মেয়ে এবং পুলিশ সার্ভিসে চারজন মেয়ে সুযোগ পেয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন তারা বলেছিল, নারী কোটা চাই না। মেধা দিয়ে চাকরি পাবে, সে কি মেধা দিয়ে চাকরি পেয়েছে? বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে? প্রিলিমিনারিতে জায়গা করতে পেরেছে? এই বড় কথা যদি না বলত, কোথাও না কোথাও তো চাকরি পেত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সব এলাকা তো সমানভাবে উন্নত নয়। অনগ্রসর সম্প্রদায় আছে। সেসব এলাকার মানুষের কোনো অধিকার থাকবে না?’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, আদালত তাদের সুযোগ দিয়েছে। তারা আদালতে যাক, বলুক।
আন্দোলনকারীরা তাঁর সিদ্ধান্ত চান—প্রশ্নকারীর এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আদালত যখন কথা বলেছেন, যখন রায় হয়েছে, আমার তো দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নাই। রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত থেকে সমাধান না আসে, আমাদের কিছু করার থাকে না। এটা বাস্তবতা। এই বাস্তবতা তাদের মানতে হবে। না মানলে কিছু করার নেই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছে, তারা আন্দোলন করতে থাকবে। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে, কেউ কিছু বলছে না। তবে তারা কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না। এর বাইরে (শান্তিপূর্ণ আন্দোলন) কিছু করলে, পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া বা পুলিশের গাড়ি ভাঙা—এগুলো করতে যদি যায়, তখন আইন তার আপন গতিতে চলবে।’