লাইফস্টাইল
পরিশ্রম করেও সফলতা যাঁদের কাছে ধরা দেয় না, তাঁরা ভাবেন সফলরা কী এমন কাজ করেন, যা তাঁদের অন্যদের চেয়ে আলাদা করে? আসলে সকালে উঠেই তাঁরা এমন কিছু প্রাত্যহিক রুটিন ও অভ্যাস মেনে চলেন, যা তাঁদের সঠিক লক্ষ্য নিয়ে দিনটি শুরু করতে সাহায্য করে। এগুলোই তাঁদের অন্যদের থেকে আলাদা করে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সফল করে তোলে।
আসুন, সেই অভ্যাসগুলো সম্পর্কে জেনে নিই—
নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে দিন শুরু করা
সফল ব্যক্তিরা কখনোই সকালকে নষ্ট হতে দেন না। তাঁরা তাড়াতাড়ি দিন শুরু করেন। ভোরে উঠে প্রার্থনা বা শরীরচর্চা করেই সারা দিনের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে নেন। এই অভ্যাসগুলো দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হওয়ার আগে তাঁদের স্থির, শান্ত ও মনোযোগী থাকতে সাহায্য করে। অনেকে ঘুম থেকে ওঠার প্রথম ৩০ মিনিট ফোন বা ই–মেইল থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করেন। মনকে স্পষ্টভাবে চিন্তা করার সময় দেন। প্রতিদিন সকালে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। এভাবে তাঁরা মস্তিষ্ককে উৎপাদনশীল এবং ইতিবাচক হওয়ার প্রশিক্ষণ দেন।
ছোট ছোট অগ্রগতিকে অগ্রাধিকার দেন
ভীষণভাবে সফল ব্যক্তিদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো তাঁরা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উপযুক্ত মুহূর্ত বা সময়ের অপেক্ষায় বসে থাকেন না। বরং প্রতিদিনের ছোট ছোট অগ্রগতিতে বিশ্বাস করেন, এটা তাঁদের কাজের উদ্যম ধরে রাখে। পদক্ষেপগুলো নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা না করে তাঁরা ধারাবাহিকভাবে লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হন। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় ও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে উঠতে শেখেন। এই মানসিকতা তাঁদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করে; অন্যদিকে অন্যরা সীমাহীন পরিকল্পনাতেই আটকে থাকেন।
সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে জানেন
সময় সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ—প্রতিটি সফল ব্যক্তি এই সত্য খুব ভালো করে জানেন। এ জন্য খুব কঠোরভাবে তাঁরা সময় মেনে চলেন। অগুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তাঁরা ‘না’ বলতে দ্বিধা করেন না। কাজের সময়সীমা বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক, যা–ই হোক না কেন, যেগুলো আসলেই তাঁদের কাছে গুরুত্ববহ, সেগুলোকে অগ্রাধিকারের শীর্ষে রাখেন।
ক্রমাগত শিখতে থাকা
শেখার কোনো শেষ নেই—বিশ্বের সফল ব্যক্তিরা সারা জীবন তাঁদের জীবনে এই চর্চা অব্যাহত রাখেন। সেটা বই পড়া হোক, পডকাস্ট শোনার মাধ্যমে হোক বা অভিজ্ঞ মানুষের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং ও নির্দেশনা গ্রহণের মাধ্যমেই হোক। কখনই তাঁরা শেখা থামান না। বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করতে এবং নতুন ধারণা পেতে এটা তাঁদের সাহায্য করে। ক্রমাগত শেখার প্রবণতা সফল ব্যক্তিদের যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে এবং সৃজনশীল হতে সাহায্য করে। তাঁদের সামনে নতুন নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করে দেয়। প্রতিদিন কেবল ২০ মিনিট পড়া বা নতুন কিছু শেখা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশাল পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
ইতিবাচক এবং সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সময় কাটানো
কথায় আছে, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। সফল ব্যক্তিরা খুব সাবধানতার সঙ্গে ও সচেতনভাবে কাছের মানুষদের বাছাই করেন। সেটা হতে পারে তাঁর পরামর্শদাতা, যাঁর মাধ্যমে তিনি অনুপ্রাণিত হন, তাঁর সহকর্মী বা প্রতিপক্ষ, যাঁর সঙ্গে তাঁর সুস্থ প্রতিযোগিতা আছে অথবা বন্ধু যাঁরা তাঁর উন্নতিতে সাহায্য করে। যেকোনো বিষাক্ত সম্পর্ক, যা তাঁদের শক্তি ও উদ্যম নষ্ট করে, তাঁদের স্বপ্ন ভেঙে দেয়, তাঁরা এড়িয়ে চলেন।ইতিবাচক পরিবেশ ও মানুষ দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকার অভ্যাস তাঁদের মানসিকভাবে শক্তিশালী রাখে এবং কাজের প্রেরণা জোগায়। প্রতিদানে তাঁরাও অন্যদের অনুপ্রেরণা জোগান। এতে সমর্থন ও সাফল্যের একটি চক্র তৈরি হয়।



.png)
.png)