
আসন্ন জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অতিথিদের আমন্ত্রণপত্রে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’ বলে অভিহিত করার পর থেকেই এ নিয়ে ভারতজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অন্যদিকে আশিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার সরকারি নথিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত’ বলা হয়েছে। ছেঁটে ফেলা হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ নামটি।
এরই মধ্যে জল্পনা, সংসদের পাঁচদিন ব্যাপী বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম পাল্টে শুধু ‘ভারত’ করার বিল আসবে। এসবের জেরে প্রতিবেশী দেশটিতে এই মুহূর্তে টক অব দ্য কান্ট্রি ‘ইন্ডিয়া’ নাকি ‘ভারত’? তবে দেশের নামব দল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ভারতের নাগরিকদের। কেউ নামবদলের পক্ষে, কেউ একদম বিপক্ষে। এমন আবহে নিজের মতামত জানালেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। নামবদলের পক্ষে তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ তার এটি পুরোনো সাক্ষাৎকার শেয়ার করেছেন বলিউডের এই কন্ট্রোভার্সি কুইন। সেখানে ‘ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ভারত নাম ব্যবহারের পক্ষের প্রশ্ন করেছিলেন কঙ্গনা। ২০২১ সালে কঙ্গনা জানিয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়া’ নাম থেকে দূরে থাকা উচিত, আমরা ভারতীয় এবং আমাদের দেশ ভারত। ‘ইন্ডিয়া’ নাম দাসত্বের প্রতীক বলেই মনে করেন অভিনেত্রী।
এদিন একটি ফ্যানের পোস্টও এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেন বলিউডের ‘কুইন’। সেখানে ওই নেটিজেন অভিনেত্রীর প্রসংশা করে লিখেছেন, সবসময়ই সময়ের চেয়ে এগিয়ে ভাবেন কঙ্গনা। এরপর জবাবে ‘থালাইভি’ নায়িকা লেখেন, আর লোকে ভাব আমি ব্ল্যাক ম্যাজিক জানি। এটা সাধারণ গ্রে ম্যাটার (বুদ্ধি) প্রিয়… সকলকে অভিনন্দন! দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে পাওয়া নাম থেকে মুক্তি জয় ভারত।
বিস্তারিত পোস্টে কঙ্গনা 'ভারত' নামের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অভিনেত্রী লেখেন, এই নামটার (ইন্ডিয়া) প্রতি ভালোবাসা থাকার কারণ কী? তারা (ব্রিটিশরা) সিন্ধু উচ্চারণ করতে পারত না। তাই সেটা অপভ্রংশ করে ‘ইন্দুস’ করেছিল। তারপর কখনও হিন্দুস, কখনও ইন্দুস এইসব বলতে বলতে ইন্ডিয়া নাম দিয়ে দিল। সেই মহাভারতের যুগ থেকে, যে সকল রাজারা কুরুক্ষেত্রের লড়াইয়ে যোগ দিয়েছেন, তারা সকলে একটাই দেশের অংশ ভারত। তাহলে এই ইন্দু-সিন্ধু কোথা থেকে এল?
কঙ্গনা আরও বলেন, ভারত নামটা অর্থপূর্ণ। ইন্ডিয়া নামের মানে কী? তারা রেড ইন্ডিয়ান বলত কারণ পুরোনো ইংরাজিতে ইন্ডিয়ান বলতে বোঝায় দাস। তাারা আমাদের ইন্ডিয়ান নামকরণ করেছিল কারণ সেটাই (দাস) ছিল ব্রিটিশদের চোখে আমাদের পরিচিতি। আগে তো ডিকশনারিতে ইন্ডিয়ান অর্থ হিসাবে উল্লেখ করা হত দাস, এখন সেটা বদলে দেওয়া হয়েছে। আমরা ইন্ডিয়ান নই, আমরা ভারতীয়।
কঙ্গনাকে আগামিতে দেখা যাবে ‘চন্দ্রমুখী ২’তে। এছাড়াও তার হাতে রয়েছে ‘তেজাস’ এবং ‘এমার্জেন্সি’র মতো বহুচর্চিত প্রোজেক্ট। ‘এমার্জেন্সি’তে দেশের প্রথম ও একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করছেন কঙ্গনা। এই ছবির পরিচালক এবং প্রযোজকও তিনি।